নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বপ্নের মেট্রোরেলের শুভ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের অহংকারের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হলো। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রায় আমরা আরেকটি পালক দিতে পারলাম, এটাই বড় কথা।”
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে আয়োজিত সুধী সমাবেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্টের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশের নতুন সংযোজন মেট্রোরেল। মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য আমরা স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেল বিরাট ভূমিকা রাখবে। আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এ মেট্রোসার্ভিস বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। আমরা ধীরেধীরে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত হচ্ছি। এ জন্য আমাদের উন্নয়নের ধারাও ধরে রাখতে হবে।
অনেক টাকা খরচ করে মেট্রোরেল করা হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “এই মেট্রোরেল সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। যাতে মেট্রোরেলের কোনো কিছু নষ্ট না হয়, সেজন্য তিনি সবাই তা ব্যবহারে যত্নশীল হতে আহ্বান জানিয়েছেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটু আগেই মেট্রোরেলের উদ্বোধন করছি। নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন জনগণ। এজন্য সবাইকে শুভেচ্ছা।” তিনি আরও বলেন, “আজ আবার প্রমাণিত হলো আ.লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়।”
শেখ হাসিনা বলেন, “এমআরটি লাইন-৬ আজ যাত্রা শুরু করছে।” তিনি জানান, “প্রতি মেট্রো ট্রেনে নারীদের জন্য আলাদা বগি থাকবে, আলাদা টয়লেট থাকবে। বাচ্চাদের পরিচর্যা করার সুযোগ থাকবে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুরোপুরি ফ্রি চলাচল করবেন।”
তিনি জানান, এই রেল চালুর ফলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে। অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারিত হবে। দৈনিক যাতায়াতের যে সময় নষ্ট হয়, টাকাপয়সা নষ্ট হয় তা আর হবে না। আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা হবে এই মেট্রোরেল।
সরকারপ্রধান বলেন, “মেট্রোরেল পরিচালনায় চারগুণ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমরা স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলব।” মেট্রোরেলকে পরিবেশবান্ধর হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শব্দ ও কম্পন্ন দূষণমাত্রার অনেক নিচে থাকবে মেট্রোরেল।”
সমাবেশে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর ছোটবোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশ রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক মিশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পদস্থ ব্যক্তিরা অংশ নেন।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুধী সমাবেশের মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। তার আগে তিনি উদ্বোধনীস্থলে পৌঁছান। বেলা ১১টার দিকে উদ্বোধনী ফলকের প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) জনসম্মুখে উন্মোচন করেন। তার সঙ্গে আছেন ছোট বোন শেখ রেহানা। প্রতিরূপ উন্মোচনের পর মোনাজাত করা হয়।
সুধী সমাবেশের সূচি অনুযায়ী, প্রথমে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমোহিদে, বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
আরও পড়ুন:
মেট্রোরেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
মেট্রোরেল ব্যবস্থায় প্রবেশ করছে বাংলাদেশ
মেট্রোরেল নগর গণপরিবহন ব্যবস্থায় অনন্য মাইলফলক : প্রধানমন্ত্রী