আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অগ্রনী ব্যাংকের সাময়িক বরখাস্তকৃত ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালামকে চুড়ান্তভাবে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি আদেশ অগ্রনী ব্যাংকের হেড অফিস থেকে কালীগঞ্জ শাখায় পৌছেছে।
“চাকরী হতে বরখাস্ত” গুরুদন্ড আরোপ শিরোনামে অগ্রনী ব্যংকের হেড অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক সুস্মিতা মন্ডল সাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জারীকৃত অভিযোগপত্র, অভিযোগ পত্রের জবাব, শুনানীর বক্তব্য, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি নিম্নোক্ত সুপারিশ করেন। যা অগ্রনী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গত ২৫ জানুয়ারি অনুমোদন করেন। ফলে অগ্রনী ব্যাংক লিমিটেড কর্মচারী চাকরী প্রবিধানমালা ২০০৮ এর অনুচ্ছেদ ৪৩(১)(খ)(৪) মোতাবেক আপনাকে চাকরী হতে বরখাস্তকরণ গুরুদন্ড আরোপ করা হয়।
আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, অনিয়ম ও ভুয়া কৃষি ঋন মঞ্জুরী ও বিতরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মৃত ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি ঋন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় প্রবাসি ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ। ভুয়া এনআইডি ব্যাবহার করে কৃষি ঋন বিতরণ। ভুয়া ও জাল মাঠ পর্চা/খতিয়ান তৈরী করে চাষযোগ্য জমি দেখিয়ে ভুমিহীনদের কৃষি ঋন প্রদান। কমান্ডিং এরিয়ার বাইরে কৃষি ঋন বিতরণ। পল্লী ঋন বিতরণে সরাসরি জিএল কোড ব্যবহার। স্বল্প মেয়াদী এসএমই ঋন বিতরণে অনিয়ম। দীর্ঘদিন গ্রামে/এলাকায় বসবাস না করা ব্যকিক্তদের নামে ভুয়া কৃষি ঋন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। স্বক্ষর/টিপসহি জাল করে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কৃষি ঋন সৃষ্টি করে অর্থ আত্মসাৎ। মঞ্জরীকৃত ঋনের চেয়ে গ্রাহককে কম টাকা প্রদান করে অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাৎ। আবাদী জমির প্রমানক গ্রহন না করে ঋন বিতরণ ও শাখার কর্মকর্তা কর্মচারিদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিরিক্ষা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অভিযোগ সমুহে মোট জড়িত টাকা ২৬.৭৫ লাখ।
জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে সাময়িকভাবে ম্যানেজার শৈলেন কুমার বিশ্বাস ও ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালামসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কালীগঞ্জের কায়েকজন গ্রাহক দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহের আদালতে চারটি মামলা করেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোঠায় ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর কালীগঞ্জ শাখায় অফিসার ক্যাশ পদে যোগ দেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে আবদুস সালাম। তিনি প্রথম বিদ্যুৎ বিল ও ২০১৯ সালের ১ ফেব্রয়ারি ঋণ শাখায় যোগদান করেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্রধারী হিসেবে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ রাজশাহী জেলার মতিহার থানায় একটি মামলা বিচারাধীন আছে।