১. কবিতা
টুঙ্গিপাড়ার ছেলে
টুঙ্গিপাড়ার ছেলে তুমি
ও হে, প্রাণের মুজিব,
তোমায় নিয়ে গর্ব করি
সকল বঙ্গবাসী।।
তুমি মোদের হৃদয় জুড়ে
আছো অমর হয়ে,
বিশ্ববাসী পেয়েছে এই
স্বাধীন বাংলাদেশকে।।
শস্য শ্যামল তরুলতা
মোদের এই বাংলা মাতা,
প্রাণ খুলে হাঁসতে পারি
বলতে পারি মনের কথা।
তুমি মোদের প্রাণের প্রিয় মুজিব।।
দুঃখ-শোকে, রোগ-ব্যাধিতে
অনাহারে, সকল কাজের মাঝে,
হয়েছো কখনো বন্ধু, কখনো ভাই
হয়েছো কারো বাবা, তুমি সবার দাতা,
তাইতো তুমি মোদের বাঙালী জাতির পিতা।
আজ তোমার জন্য সদ্য ভূমিষ্ট শিশু বলতে পারে,
আধো- আধো স্বরে মিষ্টি সুরে অ, আ
বলতে পারে আমরি বাংলা ভাষা।।
টুঙ্গিপাড়ার ছেলে তুমি
ও হে, প্রাণের মুজিব,
তোমার জন্য আজ আমরা গর্বিত বাঙালী।
কৃষক, শ্রমিক, জেলে, মাঝি, দিনমজুরী
সবাই তোমায় ভালোবাসি,
তুমি জাতির পিতা, তুমি সবার চোখের মনি
চারিদিকে মুখরিত জয় বাংলার বাণী।
লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে নিয়ে
উপহার দিয়েছো বাংলার মাঝে,
তোমার জন্য ফিরে পেয়েছে বাঙালী সোনার বাংলাদেশ।
হাসি গানে মুখরিত হয়ে আছে
শত কোটি বাঙালীর প্রাণের সোনার বাংলা গানে,
তোমার কন্যা মুজিব কন্যা আছে স্বাধীন বাংলাদেশে।।
ভয় নেই, আর ভয় নেই, ও হে, বঙবন্ধু পিতা
মোদের সাথে আছে মুজিব কন্যা,
মমতাময়ী মা জননী শেখ হাসিনা।
এখনো ভাবিনা তো তুমি নাই
তুমি আছো বাঙালীর হৃদয় জুড়ে।
এখনো ভোরের পাখিরা ডাকে ঐ বাগানে
ফোটে শাপলা, গোলাপ, রজনী গন্ধে ভরিয়ে দেয়,
মাতিয়ে দেয় শ্লোগানে গানে শত কোটি বাঙালী।
মুখরিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশে,
জয় বাংলা, বাংলা বলে।।
টুঙ্গিপাড়ার ছেলে তুমি
ও হে, প্রাণের মুজিব,
তোমায় নিয়ে গর্ব করি
সকল বঙ্গবাসী।।
ও হে, প্রাণের মুজিব।
২. কবিতা
ল্যাম্পপোস্টের নিচে
ল্যাম্পপোস্টের নিচে ঘুমিয়ে আছে ওই ক্ষুধার্ত শিশুটি,
পিতা-মাতা নেই যে ওর,
খাদ্য খুঁজতে ঘুরে শিশুটি দ্বারে-দ্বারে।
শিশুকালে মরলো পিতা, মরলো যে মাতা,
তিন কূলে ওর নেই যে কেহ-
থাকে ঘুমিয়ে ওই ল্যাম্পপোস্টের নিচে।
চুলগুলি ওর এলোমেলো, ছেঁড়া জামাখানি আছে পরনে,
মুখখানি ওর মলিন, শুষ্ক পেটটি গেছে দেহে ঢুকে।
ল্যাম্পপোস্টের নিচে ঘুমিয়ে আছে ওই ক্ষুধার্ত শিশুটি।
সকাল হলে খুঁজতে যায় কাজ –
ভাবে কেহ যদি করে দয়া, দিয়ে একটি কাজ,
পথে হাটে আর মনে-মনে ভাবে যদি পাই একটি কাজ
একবেলা তো খেতে পারবো, কিনে একটি শুকনো রুটি।
বিধাতার কাছে করুন ভাবে মনে- মনে বলে,
ওহে বিধাতা, তুমি বিনে তিন কূলে মোর নেই যে আর কেহ-
পাই যেন যে কোনো একটি কাজ।
রাস্তার ধারে গ্যারেজে একটি লোক ছেলেটিকে ডেকে বলে,
এই গাড়িটি তুই পারবি কি ধুয়ে দিতে ওহে ছেলে?
বিনিময়ে দশটি টাকা দিব আমি তোকে।
ছেলেটি খুশি মনে ঠোঁট বাঁকা করে হেসে বলে,
বেশ পারবো বাবুজি, বেশ পারবো।
ল্যাম্পপোস্টের নিচে ঘুমিয়ে আছে ক্ষুধার্ত ওই শিশুটি।
গাড়িখানা ধুয়ে পেলো হাতে দশটি টাকা-
দৌড়ে গেল দোকানটিতে কিনতে শুকনো একটি রুটি।
দোকানের সামনে শুয়ে ছিল একটি ক্ষুধার্ত কুকুর,
ছেলেটির হাতে রুটিখানা দেখে লেজ নাড়ালো
কুকুরটি বারে-বারে।
রুটি হাতে ছেলেটি হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল মাটিতে
রুটিখানা পরলো ছিটকে কুকুরটির সামনে গিয়ে,
ক্লান্ত অবুঝ কুকুরটি খেয়ে নিল রুটিটি।
অবাক বৃষ্টিতে চেয়ে রইল শিশুটি কুকুরটির দিকে,
মিষ্টি হেঁসে ভাবলো, আমার চেয়েও বেশি ক্ষুধার্ত ক্লান্ত
ওই অবুঝ কুকুরটি।
আর হলো না পেটে ওর কিছু দেওয়া, আর হলো না-
পেট ভরে জল খেয়ে নিয়ে চললো ল্যাম্পপোস্টের দিকে।
ল্যাম্পপোস্টের নিচে গিয়ে মলিনও মুখে
কপালেতে হাত রেখে পড়লো শুয়ে।
দুচোখ গড়িয়ে পড়লো অশ্রুধারা,
দীর্ঘ-নিঃশ্বাসে, ক্লান্ত শরীরে হঠাৎ পড়লো ঘুমেতে বিভোর হয়ে।
ছেলেটিকে দেখে আমারও এলো দুচোখ জলে ভরে,
ল্যাম্পপোস্টের নিচে ঘুমিয়ে আছে ওই ক্ষুধার্ত শিশুটি।