স্পোর্টসডেস্ক : আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিসেন্টে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে।
সুপার এইটের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পেতে হবে বাংলাদেশকে। শ্রীলংকার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ২ উইকেটে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিলো টাইগাররা। কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১১৩ রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানের হারে হৃদয় ভাঙ্গে বাংলাদেশের।
এবারের টুর্নামেন্টে ফর্ম বিবেচনায় ধারনা করা হচ্ছে, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলাদেশ।
কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে নেদারল্যান্ডসকে দু’বার হারিয়েছে টাইগাররা। ২০১৬ সালে ধর্মশালায় এবং ২০২২ সালে হোবার্টে ডাচদের বিপক্ষে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে চারবারের সাক্ষাতে ডাচদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা।
ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে অবশ্য ৮৭ রানের হারের লজ্জা পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ঐ হারের কারনে সমালোচনার মুখে পড়েছিলো টাইগাররা। আবারও অন্য এক বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের সাথে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট হলেও বাংলাদেশ আবারও হারের লজ্জায় পড়তে পারে ধারনা করা হচ্ছে। তবে ক্রিকেটপ্রেমিদের বিশ্বাস, নেদারল্যান্ডসের কাছে ওয়ানডে বিশ্বকাপে লজ্জাজনক হারের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। কিন্তু অতীত নিয়ে চিন্তা করতে রাজি নয় টাইগাররা।
বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিব বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের কাছে আমরা যে ম্যাচে হেরেছিলাম, সেটি এখন অতীত। ঐটা ছিল ওয়ানডে ফরম্যাট। কিন্তু এটা ক্রিকেটের ভিন্ন ফরম্যাট।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের খুব কাছে গিয়ে হৃদয় বিদারক হারের পরও আমরা দল হিসেবে খুব ভালো অবস্থায় আছি। আমাদের দলের ঐক্য খুবই শক্তিশালী। নিজেদের পারফরমেন্সের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে তাহলে বিশ্বের যেকোন দলকে হারাতে পারি বলেই আমি মনে করি।’
তানজিম আরও জানান, সুপার এইট নিশ্চিত করতে গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচ জিততে মরিয়া বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হার এখন অতীত। আমাদের হাতে দু’টি ম্যাচ আছে, ঐ দুই ম্যাচ জিততে হবে আমাদের। আমরা আত্মবিশ্বাসী, ঐ দুই দলকে আমরা হারাতে পারবো।’
বাংলাদেশ দলের বড় দু:শ্চিন্ত সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের অফ পর্শ। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি ফর্ম ফিরে পাবেন বলেই প্রত্যাশা টাইগার শিবিরে। গত দুই ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের কারন হিসেবে ব্যাট হাতে সাকিবের রান না পাওয়াকে দোষারোপ করা হচ্ছে। তবে সাকিবের অফ র্মের পরও বাংলাদেশ দলে কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ (সহ-অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি অনিক, তানভির ইসলাম, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব।
রিজার্ভ : আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ
নেদারল্যান্ডস দল : স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক), আরিয়ান দত্ত, বাস ডি লিড, ড্যানিয়েল ডোরাম, ফ্রেড ক্লাসেন, লোগান ভ্যান বিক, ম্যাক্স ও’ডাউড, মাইকেল লেভিট, পল ভ্যান মিকেরিন, সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেচ, তেজা নিদামানুরু, টিম প্রিঙ্গেল, বিক্রম সিং, ভিভ কিংমা ও ওয়েসলি বারেসি।
এদিকে, বিশ্বকাপের ২৩তম ম্যাচে ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের দুই প্রতিপক্ষ নেপাল ও শ্রীলংকার মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। তবে বৃষ্টিতে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। শেষ পর্যন্ত হয়েছে পরিত্যক্ত। এর ফলে প্রথম দুই ম্যাচ হারা শ্রীলংকাকে নেপালের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে। একই সঙ্গে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দলের সুপার এইটে ওঠার আশা শেষ। অন্যদিকে শ্রীলংকার কপাল পুড়লেও দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এই ফলাফল বেশ আনন্দের। এই ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় লাভ হয়েছে বাংলাদেশেরই। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে জয় পেলেই সুপার এইট অনেকটা নিশ্চিত হবে টাইগারদের। আবার নেদারল্যান্ডস যদি বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়, সমান সুযোগ থাকবে তাদের জন্যও। দুই দলই দুটি করে ম্যাচ খেলে একটিতে জিতেছে। পয়েন্টে দুই দল সমান হলেও নেট রান রেটে কিছুটা এগিয়ে বাংলাদেশ।