আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর জার্মানিতে ট্রেনে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে দুজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে ডেনমার্ক সীমান্তের কাছাকাছি শ্লেসউইগ হলস্টাইন রাজ্যে এ ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি হ্যামবুর্গ থেকে কিয়েল শহরে যাচ্ছিল বলে জানা যায়।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আহতদের মধ্যে তিনজনের আঘাত গুরুতর ও চারজন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। এর আগে জার্মানির বিল্ড পত্রিকা বলেছিল, হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন ও এরই মধ্যে সন্দেহভাজন হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ট্রেনটি হ্যামবুর্গের উত্তরে ছোট্ট গ্রাম ব্রোকস্টেডের কাছে পৌঁছালে হামলাকারী তার সহযাত্রীদের ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। একপর্যায়ে পালানোর চেষ্টাকালে কয়েকজন যাত্রী তাকে ধরে ফেলেন। পেরে জরুরি সেবা নম্বরে কল দিয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।।
জরুরি সেবায় কল পেয়ে খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পরে যাত্রীদের কাছ থেকে সন্দেহভাজন হামলাকারীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। তাছাড়া, ট্রেনটিতে থাকা মোট ৭০ জন যাত্রীর সবার জবানবন্দি নেওয়া হয়।
জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে আগের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িত বা পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন এমন রেকর্ড পাওয়া যায়নি। তবে তার মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতা লক্ষ্য করা গেছে।
ড্যানিশ সীমান্তের শ্লেসউইগ হলস্টেইন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্যাবাইন সোয়েতারলিন-ওয়াক খবরটি জানানোর পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের জানান, সন্দেহভাজন যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তিনি ফিলিস্তিন থেকে আসা শরণার্থী।
তিনি আরও জানান, সন্দেহভাজন ওই হামলাকারীকে ব্রকসটেড গ্রামের একটি রেল স্টেশন থেকে আটক করা হয়। পুলিশ প্রশাসন বলেছে, আটক ৩৩ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ব্যক্তির শরীরে ছোটখাটো আঘাতের চিহ্ন ছিল। আটকের পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এদিকে, এ ঘটনায় নিন্দা ও হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছেন জার্মানির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফয়েসার। বুধবার এক টুইটে তিনি লেখেন, আমরা এ ভয়ংকর অপরাধের শিকার হওয়া সব ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের জন্য চিন্তিত।
‘খবরটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি আঞ্চলিক সহকর্মী সোয়েতারলিন-ওয়াককে সহায়তা করার জন্য বলি। ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আন্তরিক সহায়তার জন্য আমি পুলিশ ও জরুরি সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধন্যবাদ জানাই ‘
অন্যদিকে, ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন অন্যান্য জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনীতিবিদসহ স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা।
জার্মানিতে এর আগেও বেশ কয়েকটি ছুরি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি ঘটনায় উগ্রপন্থি ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। সূত্র: ডয়েচে ভেলে