স্বাস্থ্য ডেস্ক : প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি গুণের জন্য সরিষার তেল আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সবার পছন্দের সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই তেল শরীরের জন্য ততটা ভালো প্রভাব বয়ে আনে না। সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ। এই তেল কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। রক্ত সংবহন ও রেচনতন্ত্রের শক্তিশালী করে।
ইন্ডিয়া টুডের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ হওয়ায় হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর। এই তেল খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে। সরিষার তেলে ওমেগা -থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং সেলেনিয়ামের মতো যৌগ রয়েছে। যা শরীরের প্রদাহ কমাতে পারে। তেলটিতে ভিটামিন ই রয়েছে। যা এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে ত্বকের জৌলুস ঠিক রাখে। শরীরের কোষ সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
মনে রাখতে হবে, হঠাৎ করেই সরিষার তেল বেশি পরিমাণে খাওয়া শুরু করবেন না। এর স্বাস্থ্য উপকারিতা যেমন আছে- আবার প্রতিক্রিয়াও আছে। আপনার খাদ্য বা জীবনধারায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, সরিষার তেল মস্তিষ্কের জন্য ভীষণ উপকারী। বিশেষ করে অবসাদ কাটাতে, স্মৃতিশক্তি আর মনঃসংযোগ বাড়াতে এ তেল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরিষা তেল ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
তবে সরিষার তেলের কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। এ তেলে প্রায় ২০-৪০ শতাংশ এরিউসিক অ্যাসিড আছে যা শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি করে। যার কারণে হৃদপিণ্ডে মারাত্মক ক্ষতি হয়। এছাড়াও ফুসফুসের ক্যানসার ও এনিমিয়াও হতে পারে।
দীর্ঘকাল ধরে এরিউসিক অ্যাসিড প্রবেশ করলে সেটি হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে এক ধরনের রোগের সৃষ্টি করে, যার নাম মায়োকার্ডিয়াল লিপিডোসিস। যদিও সরাসরি মানব শরীরে এ নিয়ে কোনো ধরনের গবেষণা এখনও পাওয়া যায়নি। তবে কারো শরীরে অল্প মাত্রায় এরিউসিক অ্যাসিড প্রবেশ করলে সেটা নিরাপদ। কিন্তু এর মাত্রা অধিক হলেই সেটি বিপজ্জনক হতে পারে মানব শরীরে।
আসল তেল চিনতে হলে, দোকান থেকে সরিষার তেল কিনে আনার পর ২ থেকে ৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন। ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর যদি দেখেন সরিষার তেলের ওপর সাদা রঙের কোনো আস্তরণ দেখা দিয়েছে কিংবা সরিষার তেল জমে গেছে তাহলে বুঝবেন তেলটি নকল।
আরও পড়ুন:
স্ট্রোক: রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে যেসব পদক্ষেপ