তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে কলেজ ছাত্র আবু তাহের আহমদ মামুন হত্যা মামলার প্রধান আসামি উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের কচুরগুল গ্রামের ইলিয়াছ আলীর ছেলে জুনেদ আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
রবিবার (১২ই মে) রাতে র্যাব-৯ এর সহায়তায় জুড়ী থানার এসআই সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সিলেট থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, যৌতুকের জন্য স্ত্রীর ওপর খেপে গিয়ে শ্যালক’কে গাড়ি চাঁপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের কচুরগুল গ্রামের ইলিয়াছ আলীর ছেলে জুনেদ আহমদকে আসামি করে মামলা করেন নিহত আবু তাহের আহমদ মামুনের মা জিবা বেগম। এরপর থেকে আসামি জুনেদ পলাতক ছিলেন।
নিহত কলেজছাত্র আবু তাহের আহমদ মামুন(২০) উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে। মামুন পার্শ্ববর্তী উপজেলা কুলাউড়া সরকারি কলেজে স্নাতকে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রের বরাতে জানা যায়, প্রায় আড়াই বছর আগে জুনেদ মিয়ার সঙ্গে জায়ফরনগর ইউনিয়নের চাটেরা গ্রামের মৃত রাজুল মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তারের(২২) বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর থেকে যৌতুকের দাবিতে জুনেদ স্ত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিস, বৈঠকও হয়। গত মঙ্গলবার জুনেদ আবারও ফারজানার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান। ফারজানা মুঠোফোনে স্বজনদের তা জানালে জুনেদ খেপে গিয়ে তাঁকে হুমকি-ধমকি দেন।
খবর পেয়ে ফারজানার বড়ভাই আবুল হোসেন ও ফুপাতো ভাই আবু তাহের মোটরসাইকেলে যোগে সেখানে যাচ্ছিলেন। তাঁরা পূর্ব কচুরগুলের কাছে হলম্পাবাজারে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে জুনেদ মিয়া তাঁর নিজের ট্রাক দিয়ে মোটরসাইকেলকে চাঁপা দেন। গুরুতর আহত দুই মোটরসাইকেল আরোহী আবুল হোসেন ও আবু তাহেরকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতেই আবু তাহের মারা যান। দুর্ঘটনার পর আবু তাহেরের মা জিবা বেগম বাদী হয়ে জুনেদকে আসামি করে মামলা করেন।
রবিবার (১২ মে) রাতে র্যাব-৯ এর সহায়তায় জুড়ী থানার এসআই সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সিলেট থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। আসামি গ্রেপ্তারে গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা করেন।
মামলার বাদী জিবা বেগম বলেন, আমার ছেলের হত্যাকারি ঘাতক জুনেদের ফাঁসি চাই। জুড়ী থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।