অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই চলতি বছরের মার্চ মাসে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট ২০২৩’ আয়োজন করতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে এই বিজনেস সামিট সম্পর্কে ব্রিফিং ও মধ্যহ্নভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এফবিসিসিআই। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বাংলাদেশের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন।
এফবিসিসিআইর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী মার্চের ১১-১৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে ৩ দিন ব্যাপী এই সামিট। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই সামিটের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে এফবিসিসিআই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সামিটের উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বৈশ্বিক ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, উদ্ভাবক, নীতিনির্ধারক, বাজার বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে তুলে ধরতে এই আয়োজন অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা এফবিসিসিআই’র।
বাংলাদেশে উৎপাদিত সেরা পণ্যগুলোকে সামিটে উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হবে উদ্যোক্তাদের। দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, বাধা এবং করণীয় নির্ধারণে ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশ্লেষক এবং নীতিনির্ধারকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ৩টি প্ল্যানারি সেশন, ১৩ টেকনিক্যাল সেশন, উন্মুক্ত আলোচনা সহ বিটুবি এবং নেটওয়ার্কিং সেশন প্রভৃতি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র সহযোগিতায় আয়োজিত এই সামিটের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন। সামিটের অনুষ্ঠান প্রচারের পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্ভাবনা বিষয়ে অনুষ্ঠানও প্রচার করবে সিএনএন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ব্রিফিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ বিজনেস সামিট আয়োজন এফবিসিসিআইর একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। মেগা এ কর্মসূচী আয়োজনের জন্য এফবিসিসিআইকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন যোগাযোগ ও উৎপাদনের হাব। বৈশ্বিক সংকটেও দেশের জিডিপির ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগোচ্ছে। টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকার খাদ্য নিরাপত্তা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারসহ সৃজনশীলতায় জোর দিচ্ছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেন, বাংলাদেশকে এশিয়ার বিজনেস হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে এফবিসিসিআইর বাংলাদেশ বিজনেস সামিট আয়োজনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রনকারী দেশ সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, জাপান, ভারত, চীন, রাশিয়া এবং আমেরিকার বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি এখন রপ্তানির্ভর শিল্পকারখানায় রূপান্তরিত হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে। সামিটে অংশ নিয়ে বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে নিজেদের দেশে ব্র্যান্ডিং করতে কূটনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন বলেন, উন্নত ব্যবসা পরিবেশ ও প্রযুক্তির সহায়তায় সৃজনশীল অর্থনীতি তৈরিতে কাজ করছে বেসরকারি খাত। তিন দিন ব্যাপী বাংলাদেশ বিজেনেস সামিটে বিশ্ব ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশের ইতিবাচক অবস্থান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য, বিনিয়োগ প্রতিযোগিতাসহ অংশীদারিত্বের বিশেষ সুযোগ সুবিধা তুলে ধরা হবে। এছাড়া অর্থনীতিতে অবদান রাখা বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের এফবিসিসিআই বিজনেস পুরষ্কার প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি। সামিটে আন্তর্জাতিক ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
বাংলাদেশে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে, মন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, এফবিসিসিআইর সাবেক ও বর্তমান সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সহসভাপতি, পরিচালকবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।