সাব্বির মির্জা (তাড়াশ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (আয়া) পদে চাকরি দেওয়ার নামে ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গোন্তা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ টি আর আব্দুল মান্নানের (৫৫) বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছেন এক চাকরি প্রার্থী। অধ্যক্ষ টাকা নেওয়ার পরও অন্য একজনকে চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন ফাতেমা খাতুন (২৫) নামের ওই চাকরি প্রার্থী।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে তাড়াশ সহকারী জজ আদালতের পেশকার মুনতাসীন মামুন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই ভুক্তভোগী নারী তাড়াশ সহকারী জজ আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টকে (সিআইডি) তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, গোন্তা আলিম মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদের জন্য গত বছরের ২৭ জুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে আয়া পদে যথানিয়মে আবেদন করেন ফাতেমা খাতুন। পরে ফাতেমা খাতুনের কাছ থেকে তৎকালীন তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্বাছ-উজ-জামানের উপস্থিতিতে চাকরি দেওয়ার শর্তে মাদরাসার উন্নয়নের কথা বলে অধ্যক্ষ টি আর আব্দুল মান্নান ৬ লাখ টাকা নেন। পরবর্তী ২১ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু একই পদে একাধিক প্রার্থীর কাছে থেকে অধ্যক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগে নিয়োগের দিন মাদরাসায় বিক্ষোভ করেন দুই প্রার্থী। এমনকি এক প্রার্থী নিয়োগ কমিটির সামনেই পরীক্ষা কেন্দ্রে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এ অবস্থায় ডিজির প্রতিনিধি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মাদ আবু নঈম নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে চলে যান। এরপর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি মাদরাসার অধ্যক্ষ গোপনে নিয়োগ পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তন ও তার মনোনীত প্রার্থীদের চূড়ান্ত করে নিয়োগ সম্পন্ন করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ভুক্তোভোগী ফাতেমার ৬ লাখ টাকার মধ্যে ২ লাখ টাকার ফেরত দেন অধ্যক্ষ। বাকি ৪ লাখ টাকা চাইলে অধ্যক্ষ অস্বীকৃতি জানান।
ফাতেমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগেই অধ্যক্ষ টি আর আব্দুল মান্নান আমার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েছিল। সেই ভিডিও আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
তবে এ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত গোন্তা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ টি আর আব্দুল মান্নান বলেন, নিয়োগ বোর্ড ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির নির্দেশে ওই পদগুলোর নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নিয়োগে কোনো টাকা লেনদেন হয়নি। সে চাকরি না পেয়ে এ মামলাটি করেছে।