চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান, এমডি ও চিফ এডভাইজারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ইনোভেটিভ ফার্মার স্বত্বাধিকারী কাজী মোহাম্মদ শহিদুল হাসান (৪৩)। জামানত চেকের বিপরীতে ২ কোটি টাকার চাঁদা দাবি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিসহ প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
বাদির আইনজীবি সুলতান মোহাম্মদ ওহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলা নং-১৫১/২৩ (কোতোয়ালি)।রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। পরে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাইসুল উদ্দিন (৪২) ও একই প্রতিষ্ঠানের এমডি মোহাম্মদ মুনতাহার উদ্দিন (৩৭) এবং কোম্পানীর চিফ এডভাইজার মোঃ নিজাম উদ্দিন (৬৫)। এরা তিনজনেই একই পরিবারের সদস্য।
উল্লেখিত অভিযুক্তদের স্থায়ী ঠিকানা সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড রহমত নগর হলেও বর্তমানে বসবাস করেন নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিগত ২০১৪ সালের ২রা নভেম্বর এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এর ঔষধ বাজারজাত করার জন্য অভিযোগকারীকে পরিবেশক নিয়োগ করেন। তাঁদের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। শর্তমতে চুক্তির মেয়াদ ছিলো ১০ বৎসরের। চুক্তিপত্রে উল্লেখ ছিলো ঔষধ উৎপাদন করে বাজারজাত করণের উদ্দেশ্যে বাদির নিকট পৌঁছাবেন।
পরবর্তীতে ঔষুধের বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৪০ ভাগ টাকা অভিযুক্তরা পাবেন। বাদ বাকি ৬০ ভাগ টাকা বাদী (অভিযোগকারী) গ্রহণ করবেন। কাগজে কলমে শর্ত ছিলো ইনোভেটিভ ফার্মা ছাড়া আর কোন পরিবেশক নিয়োগ করবেন না। কিন্তু অভিযুক্তরা চুক্তির সেই শর্তও ভঙ্গ করেন।অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, বিগত ২০১৬ সালের আগষ্ট মাসের মধ্যবর্তী সময়ে এলবিয়নের ফ্যাক্টরীতে ঔষধ প্রশাসন পরিদর্শনে আসেন। তখন এলবিয়নের চেয়ারম্যান, এমডি ও চিফ এডভাইজার ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অজুহাত দেখিয়ে তাঁদের উৎপাদিত (আনুমানিক) ৫/৬ কোটি টাকার ঔষধ বাদির গুদামে মজুদ করেন।
চুক্তির শর্ত মতে, ৪০ ভাগ লভ্যাংশের বিপরীতে বাদিকে ৯টি তারিখ বিহীন চেক জামানত হিসেবে দেওয়ার অনুরোধ করেন। যা ঔষধ বিক্রয়ের পর মুল্য বুঝিয়ে দিলে ফেরত প্রদানের কথা জানান। এরই প্রেক্ষিতে বাদি সরল বিশ্বাসে চেক প্রদান করেন। কিন্তু অভিযুক্তরা পরে ঔষধ ফেরত নিলেও চুক্তি বাস্তবায়ন না করে বিরত থাকেন।
মামলার বাদি ইনোভেটিভ ফার্মার স্বত্বাধিকারী কাজী মোহাম্মদ শহিদুল হাসান জানান, জামানত চেকগুলো ফেরত চাইলে এলবিয়নের এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাইসুল উদ্দিন ও বাকি অভিযুক্তরা মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এমনকি চেক ফেরত চাইলে দুই কোটি টাকা দিতে হবে বলে অভিযোগে জানান।
এ প্রসঙ্গে জানতে এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাইসুল উদ্দিন এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।