নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৫ মাস আমদানি করার মতো রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা আছে। আমাদের মুদ্রাস্ফীতি ৯-এর ওপর চলে গিয়েছিল। এখন ৮ এর নিচে নেমে গেছে। আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম অর্থনীতির দেশ।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলারের বেশি এবং ২০২৬ সালে চার হাজারে ডলারে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ এখনও পরিস্থিতি সামাল দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনার পর বিশ্বে নতুন করে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেটির প্রতিক্রিয়া আমাদের জীবনে এসে গেছে। আমরা একটা বিপদে আছি, এ কথা সত্য। আমাদের আজ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করতে হয়। আজ গ্যাসের সংকট তৈরি হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। সাধারণ, নিম্ন ও স্বল্পবিত্ত মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে যাচ্ছি। আমাদের রিজার্ভ আরও বাড়বে, তেমন আভাস পাচ্ছি। রপ্তানি আয় ক্রমেই বাড়ছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি বাড়বে— এমন আভাস অর্থনীতিতে পাওয়া যাচ্ছে।
নির্বাচনের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আরেকটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আগামী নির্বাচন। সেটা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে হবে বলে নির্বাচন কমিশন আভাস দিয়েছে। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে করণীয় সম্পর্কে গতকাল (বৃহস্পতিবার) এমপিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদানের সময় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ পৃথিবীর বহু দেশেই সংকট। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়াও আছে। ইউরোপে পর্যন্ত রেকর্ড ভাঙা সংকট। আমেরিকায় সংকট। সেখানে সরকার সম্পর্কে নানা কথা থাকে, সমালোচনাও থাকে। কিন্তু সেখানে প্রেসিডেন্টে বাইডেনের পদত্যাগ দাবি করে না। তবে আমাদের দেশে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনের দাবি করা হয়। একইসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত— এ কথা আমি বলব না। আমাদের গণতন্ত্র বিকাশমান পর্যায়ে রয়েছে। আমরা ভুল-ত্রুটি সংশোধন করতে পারব এবং বিকাশের ধারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। রাতারাতি এটির পরিবর্তন সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর এ দেশে বলতে গেলে গণতন্ত্র ছিল না। গণতন্ত্র ছিল শৃঙ্খলিত। শেখ হাসিনার দুঃসাহসিকতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং জেলা হত্যার বিচার হয়েছে। এসব অসম্ভব কাজগুলো তিনি সম্ভব করতে পেরেছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিয়ে চলে গেছে। শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে ঘোষণা দিয়েছেন দেশের টাকায় পদ্মা সেতু হবে এবং হয়েছে। এই পদ্মা সেতুতে প্রতিদিন আমরা দুই কোটি দশ থেকে ১৫ লাখ টাকা টোল পাচ্ছি। তারপর মেট্রোরেল হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নানা বয়সের মানুষ এটি দেখতে আসছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল হচ্ছে। যেটি দক্ষিণের এশিয়ার কোথাও নেই। আমি প্রথম যখন এলাকাটি দেখতে যায় তখন দাঁড়িয়ে মনে হয়নি এরকম একটা কিছু হতে পারে। সাংহাইয়ের মতো চট্টগ্রাম হচ্ছে ওয়ান সিটি টু টাউন। এ টানেলে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। কাজের অগ্রগতি ৯৫.৫ শতাংশ। টানেলের কারণে কক্সবাজার আরও কাছে চলে আসবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা সভাপতি এম এ সালাম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।