ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহে ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগে কবি, সংস্কৃতিকর্মী ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার শামীম আশরাফ (৩৮) কে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে সাইবার সুরক্ষা ও দণ্ডবিধি আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে নগরীর আমলাপাড়া এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে।
তিনি নগরীর দুর্গাবাড়ী রোড এলাকায় ‘গ্রাফিটি’ নামে একটি মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং ‘পরম্পরা’ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়,ধর্ম নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় সদর উপজেলার চরআনন্দিপুর গ্রামের মোঃ দুলাল মিয়ার ছেলে মোঃ ইয়াসিন আরাফাত বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাইবার সুরক্ষা ও দণ্ডবিধি আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী ইয়াসিন আরাফাত গনমাধ্যমকে বলেন, বেহেশত নিয়ে শামীম আশরাফের অবমাননাকর মন্তব্যে মুসলিম সমাজ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাঁর উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-দক্ষিণ) মহিদুল ইসলাম বলেন, শামীম আশরাফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য করায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তাকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শিবিরুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট মামলায় আসামিকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে শামীম আশরাফ নিজের ফেসবুকের একটি পোস্টে ‘শামীম চৌধুরী’ নামে এক ব্যক্তির মন্তব্যের জবাবে বেহেশত নিয়ে কটুক্তি করেন। পরে ওই মন্তব্যটি ভাইরাল হলে ধর্মপ্রাণ মানুষ ফেসবুকে তার গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়ে স্ট্যাটাস দিতে থাকেন।
এদিকে, সোমবার দুপুরে নগরীর বড় মসজিদের সামনে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে অপূর্ব পালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তৌহিদী ছাত্র জনতা সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তারা শামীম আশরাফকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সতর্ক অবস্থান নেয়। পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে শামীম আশরাফ নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে লেখেন, “আমার যে কমেন্টটি মানুষকে ব্যথা দিয়েছে, সে জন্যে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।” তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তাকে আটক করে ‘গ্রাফিটি’ কার্যালয়ে তল্লাশি চালায়। পরে রাতেই তাকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।


