নিজস্ব প্রতিবেদক : সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশ অ্যাক্টিভ হলে বলে বেশি করে ফেলেছে। ক্রিকেট খেলায় দাগ দিয়ে তো বলা সম্ভব হয় না কোনটা ‘ওয়াইড’ হবে। গতকাল (শনিবার) আগুন ধরার পর পুলিশ বাধা দিয়েছে। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে আগুন ধরার আগেই অ্যাকশনে যাওয়া। গতকাল চট্টগ্রামেও একটি ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাগুলো যেন আস্তে আস্তে কমে যায়, সেজন্য সবার সহযোগিতা দরকার।
রোববার (৩১ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনই মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর ওপর নির্ভর করে নির্বাচন কতটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচনে নিরাপত্তা প্রদান ও আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহায়তা করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। জনগণের অবাধ ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে। সবার সহযোগিতায় অন্তর্বর্তী সরকার অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে বলে আশা করি।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে দলের কার্যকলাপ নেই তারা তো চাইবেই নির্বাচন না হোক। এটা প্রতিহত করার দায়িত্ব জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সবার। কেউ যেন নির্বাচন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। নির্বাচনের জন্য যতটা প্রস্তুতি দরকার ততটা প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাকিটা নির্ভর করে জনগণ ও রাজনৈতিক দলের ওপর।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকের বিষয়ে জানিয়ে তিনি বলেন, রোববার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির মিটিং ছিল। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে পুলিশ কর্মক্ষেত্রে যেন নিরপেক্ষ আচরণ করে সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে প্রধানত আলোচনা হয়েছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। পুলিশ সংস্কার কমিশন, রাজনৈতিক দলের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম ও মাদক নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি ও ফেক নিউজ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এছাড়াও বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থ এবং গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের জন্য সব রাজনৈতিক দলকে ক্ষুদ্র ব্যক্তি এবং দলীয় স্বার্থ পরিত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যে ফাটল ধরলে দোসরারা বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ঢাকা ও এর আশপাশে এক হাজার ৬০৪টি অবরোধ হয়েছে। ১২৩টি সংগঠন এসব অবরোধ করেছে। এগুলো যদি রাস্তায় না করে তাহলে জনদুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। যানজটের বড় একটি কারণ এটি। এ সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে সড়ক বাদ দিয়ে খোলা মাঠ কিংবা উদ্যানে নিজেদের দাবি-দাওয়া চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন: অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি


