কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : সিলেটের ভোলাগঞ্জে চুরি হওয়া সব পাথর সাত দিনের মধ্যে আগের জায়গায় ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পাথর লুটকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়।
ওই রিটে বলা হয়, এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয় এবং সেখানে যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর একেএম নূরুন নবী এ রিট করেন।
এছাড়া, সিলেটের পর্যটন এলাকা ভোলাগঞ্জ থেকে সাদা পাথর লুটের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তার ব্যাখ্যা চেয়ে একটি রুল জারিরও আবেদন করা হয়েছে রিটে।
রিটে ঘটনা তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও এতে বিবাদী করা হয়েছে পরিবেশ সচিব, আইজিপি, ডিসি সিলেট, ইউএনও কোম্পানিগঞ্জসহ ১০ জনকে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদা সোনাখ্যাত দেশের শীর্ষ পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর অবাধে লুটপাট চলছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ পাথর লুটের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়। পরে এ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুদকের একটি টিমও সেখানে অভিযান চালায়।
এদিকে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রের সাদা পাথর উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। বুধবার মধ্যরাতে ভোলাগঞ্জ সড়কের প্রবেশমুখে অভিযান চালায় তারা। আমদানির প্রমাণপত্র যাচাই করে বৈধ পাথরবাহী ট্রাকগুলো যেতে দেয়া হচ্ছে। যৌথবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাকে করে আনা এসব পাথরের আমদানির প্রমাণপত্র পরীক্ষা করে দেখেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রভাবশালীদের লাগামহীন লুটপাটে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান সাদাপাথরসহ সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই লুটপাট অব্যাহত রয়েছে, যা শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, পর্যটন শিল্পকেও হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।


