কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর বিদেশে পাচারের অভিযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।
রোববার (৩ আগস্ট) প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র অ্যাড. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া টেন্ডার ও বিল প্রস্তুতপূর্বক নিজস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে সরকারি উন্নয়ন তহবিল ও সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব তহবিল থেকে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাত হাজার পাঁচশত কোটি টাকা আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে পাচারের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ধারায় একটি মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত কমিশন কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পে ভুয়া দরপত্র ও বিল প্রস্তুত করেন। এরপর নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কাজের বরাদ্দ দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এসব কাজ বাস্তবায়নের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি কোথাও কোথাও প্রকল্পের অস্তিত্বই নেই বলেও অভিযোগপত্রে বলা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এসব ভুয়া টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বিলিংয়ের ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়। নগরের উন্নয়ন কিংবা সেবার পরিবর্তে ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থ রক্ষা করতেই এমন পদ্ধতিগত দুর্নীতির আশ্রয় নেন অভিযুক্তরা। আত্মসাতের টাকাগুলোর বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলেও প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মিলেছে।
জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, আর্থিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠে। এমনকি তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার তার বিরুদ্ধে বিশাল অংকের দুর্নীতির অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা হলো।
এই মামলার প্রেক্ষিতে দুদক জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ ও সম্পদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। একইসঙ্গে দেশের বাইরে অর্থ পাচারের উৎস ও ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হবে।


