নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জে অপহরণকারী চক্রের মুলহোতাসহ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
বুধবার (২ জুন) রাত ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৩নং ওয়ার্ড রসূলবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মে. ওয়াসিম (৩০)কে উদ্ধার করাসহ এর অপহরণের সাথে জড়িত চার অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হল-মোসা. সুমাইয়া খাতুন (২০), মো. শাকিল (২৫), মো. ফাহিম হোসেন (২৭), হোসনেয়ারা (৩০)। অপহরণকারীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।অপহৃত মো. ওয়াসিম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর এলাকার মৃত. ইকবাল হোসেনের ছেলে।
আটককৃত মোসা. সুমাইয়া খাতুন রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানার শ্যামপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে, মো. শাকিল কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ২নং পাঁচ গাছিয়া ইউনিয়নের সবাহন গ্রামের মো. স্বপন মিয়ার ছেলে, মো. ফাহিম হোসেন জাফরাবাদ গ্রামের মো. খালেকের ছেলে, হোসনেয়ারা পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার পেনাখালি গ্রামের মৃত. তাহের আলী শেখের মেয়ে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, অপহৃত মো. ওয়াসিম এর সাথে মোসা. সুমাইয়া খাতুনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়। এরপর থেকে তারা প্রায় সময়ই মোবাইল ফোনে কথপোকথন করতো। তারই একপর্যায়ে ১লা জুলাই সকালে মোসা. সুমাইয়া খাতুন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হতে মো. ওয়াসিমের মোবাইলে ফোন করে কথা বলে এবং একপর্যায়ে সুমাইয়া তার সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার রসুলবাগ এলাকার ঈগল বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর দেখা করার জন্য বলে। তখন আমি সুমাইয়ার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তার কথামতো দুপুর অনুমান ১টায় তার সঙ্গে বন্ধু আল-আমিনসহদেখার জন্য যায়। তারপর বন্ধু আল-আমিনকে নিয়ে ওয়াসিম সুমাইয়ার সাথে দেখা করে। তাদের কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মো. শাকিল, মো. ফাহিম হোসেন, হোসনেয়ারা ও ৫-৬জন আসে। সকলে পরিকল্পনা অনুযায়ী বেআইনী জনতাবদ্ধে ওয়াসিম ও আল-আমিনকে জোরপূর্বক অপহরণ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার রসুলবাগ এলাকার সুমাইয়ার ভাড়া বসত বাড়ীর ভিতরে নিয়ে আটক আটকে রাখে। তারপর অপহরণকারীরা মুক্তিপণ বাবদ ১ লক্ষ টাকা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে, অপহরণকারীরা এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে থাকে, তাদের ভয়ে ওয়াসিমের কাছে থাকা নগদ ৩হাজার ৫শ’ টাকা এবং আল-আমিনের সাথে থাকা ব্যবসায়িক কাজের নগদ ৪৬ হাজার ৫শ’ টাকা ও আল-আমিন এর ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্ট ০১৯৭৮-১৮৮৬৪৩ নম্বর থেকে অপহরণকারীদের প্রদানকৃত বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট নম্বর ০১৭৯৯-৩৩১১২৬ এ ২ হাজার ৫শ’ টাকা মুক্তিপণ বাবদ তাদের দেয়া হয়।
বাকী টাকার জন্য ওয়াসিম ও আল-আমিনকে মারপিট করতে থাকলে, তাদের বন্ধু সোহেল (৩২) ও ইয়াকুব (২৫)দের বাকি টাকা পাঠানোর জন্য বললে, সেই মোতাবেক সোহেল (৩২) অপহরনকারীদের প্রদানকৃত বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট নম্বর ০১৭৯৯-৩৩১১২৬ এ ৯ হাজার ৮২০টাকা এবং অপর বন্ধু ইয়াকুব (২৫) বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট নম্বর ০১৭০৯-২২২৮১৯ এ ১৯হাজার ৯৫০টাকা মুক্তিপণ বাবদ প্রদান করে।
বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে, থানা থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বজলুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স অপহরণকারীদের হেফাজতে হতে ওয়াসিম ও আল-আমিনকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরনকারী চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করে ও কৌশলে কয়েকজন পালিয়ে যায়।
এসআই মো. বজলুর রহমান অপহরণকারীদের হেফাজত হতে নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, মোবাইল প্রেমের নাটকত সাজিয়ে একটি চক্র অপহরন করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া এ চক্রটি। এ চক্রের গতিবিধি আমাদের নজরে ছিল। ২ অপহৃতকে উদ্ধারসহ ৪জন আসামীকে ৫০ হাজার টাকাসহ আটক করতে সক্ষম হই। এ চক্রের হাত থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতন হওযার অনুরোধ করছি। আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।


