December 15, 2025 - 10:53 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeআইন-আদালতবিচারকদের শৃঙ্খলা বিধি নিয়ে রিভিউ আবেদনের আদেশ স্থগিত

বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধি নিয়ে রিভিউ আবেদনের আদেশ স্থগিত

spot_img

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা বিধি অনুমোদন ও গ্রহণ করে ২০১৮ সালের আপিল বিভাগের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সর্ব্বোচ আদালত।

রোববার (২৯ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- মো. আশফাকুল ইসলাম, জুবায়ের রহমান চৌধুরী, মো. রেজাউল হক, এস এম এমদাদুল হক ও ফারাহ মাহবুব।

আদালতের এ আদেশের ফলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে হাইকোর্টে চলমান রিটের শুনানি নিষ্পত্তির আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তৎকালীন সরকার এই শৃঙ্খলা বিধি গ্রহণ করেছিল, যা নজিরবিহীন। তাই আদালতের অনুমতি নিয়ে রিভিউ আবেদন করা হয়।’

বিচার বিভাগ পৃথক্‌করণ–সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা-২০১৭ প্রজ্ঞাপন আকারে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়। এই বিধিমালা গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি আদেশ দেন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ। এই আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরসহ আট আইনজীবী গত মাসে আপিল বিভাগে আবেদন (রিভিউ) করেন। আবেদনটি গত ২১ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানি হয়।

আদালতে পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।

এর আগে, গত ২৬ জুন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধির গেজেট গ্রহণের আদেশ দিয়েছিল। আজ সেই আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে তা স্থগিত করা হলো।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। মাসদার হোসেন মামলাটি নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকসংক্রান্ত মামলা হিসেবে পরিচিত। এই মামলার রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।

১২ দফা নির্দেশনার মধ্যে ছিল

১। সংবিধানের ১৫২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় সব বিভাগের কাজ সার্ভিস অব রিপাবলিকের ভেতরে পড়বে। তবে বিচার বিভাগের কাজ ও অবকাঠামোর সঙ্গে প্রজাতন্ত্রের সিভিল সার্ভিসের অনেক ভিন্নতা রয়েছে। বিচার বিভাগকে অন্যান্য সিভিল সার্ভিসের সঙ্গে একত্র করা যাবে না।

২। বিচারিক হাকিমদের নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা এবং নির্বাহী বিভাগের হাকিমরা বিচারিক কাজ করতে পারবেন না।

৩। সিভিল সার্ভিস অর্ডার ১৯৮০ অনুযায়ী, সব হাকিমকে পিএসসির অধীনে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে একসঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয়। একসঙ্গে নিয়োগ দেওয়া সংবিধান পরিপন্থি।

৪। এই রায় পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা এবং কমিশন গঠন করতে হবে।

৫। সংবিধানের ১১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি জুডিসিয়ারির সবার চাকরির বিধিমালা (নিয়োগ, পদায়ন, বদলি পদোন্নতি ও ছুটিসহ অন্যান্য) প্রণয়ন করবেন।

৬। রাষ্ট্রপতি জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন বিধিমালা প্রণয়ন করবেন।

৭। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের থাকবে।

বিজ্ঞাপন

৮। বিচার বিভাগ জাতীয় সংসদ বা নির্বাহী বিভাগের অধীনে থাকবে না এবং বিচারিক হাকিমসহ সব বিচারক স্বাধীনভাবে কাজ করবেন।

৯। জুডিসিয়ারির (নিম্ন আদালত) বার্ষিক বাজেট প্রণয়নের ওপর নির্বাহী বিভাগের কোনো হাত থাকবে না। এই বাজেট সুপ্রিম কোর্ট প্রণয়ন এবং বরাদ্দ করবে।

১০। জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যরা প্রশাসনিক আদালতের আওতাভুক্ত থাকবেন।

১১। এই রায় অনুযায়ী বিচার বিভাগ পৃথককরণের জন্য সংবিধানে কোনো সংশোধন করার প্রয়োজন নেই। তবে পৃথককরণ আরও অর্থবহ করতে যদি সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তবে তা করা যাবে।

১২। জুডিসিয়াল পে-কমিশন: জুডিসিয়াল পে-কমিশন জুডিসিয়ারির সদস্যদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে যতদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ না করবে, ততদিন পর্যন্ত বর্তমান অবকাঠামো অনুযায়ী তার সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।

আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর আইন মন্ত্রণালয় বিধিমালার একটি খসড়া তৈরি করে ২০১৬ সালের ৭ মে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে জানান আপিল বিভাগ। সর্বশেষ সংশোধিত খসড়া তৎকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই জমা দেয় আইন মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্ট কমিটির সংশোধনী অনুসারে সরকার বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করবে বলে আশা করে ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট আদেশ দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৯ সদস্যের আপিল বিভাগ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ

ওসমান হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত : মেডিকেল বোর্ড

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ মো. ওসমান...

এমবিবিএস ভর্তির পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এবার পাসের হার ৬৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। রোববার...

হাদির ওপর হামলাকারী মূল আসামি দেশেই আছে: ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী মূল আসামি দেশেই আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা...

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৩৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে...

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়া হবে। এই প্রটোকলে রাজনৈতিক...

সূচকের পতনে লেনদেন শেষ

পুঁজিবাজার ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার...

এন্টারপ্রাইজ কানেক্টিভিটি ও ডিজিটাল সল্যুশনে পিটিসি-এক্সেনটেকের কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি

কর্পোরেট ডেস্ক: পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিএলসি (পিটিসি)-এর সাথে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এক্সেনটেক পিএলসি। করপোরেট সার্ভিস, সিম-ভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ সল্যুশন এবং ডিজিটাল সক্ষমতা...

গ্রাহক সন্তুষ্টির প্রত্যয় নিয়ে দেশের ১৬ অঞ্চলে ইউসিবির টাউনহল

কর্পোরেট ডেস্ক: একই দিনে, একই সময়—দেশের ১৬টি অঞ্চলে একসাথে টাউনহল। কোথাও ব্যাংকের চেয়ারম্যান, কোথাও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কোথাও এএমডি, ডিমডি কিংবা সিনিয়র কর্মকর্তারা। পুরো দেশের...