অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : বেসরকারি খাতের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে খুব শিগগিরই একীভূত করে একটি ব্যাংকে রূপান্তরিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তবে এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোর কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি হারানোর শঙ্কা নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
একীভূত পাঁচ ইসলামী ব্যাংক হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক।
রোববার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান গভর্নর।
গভর্নর বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে ব্যাংক মার্জারের (একীভূত) কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করব পরবর্তী সরকার এসে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মার্জার করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে প্রয়োজনে শাখাগুলো স্থানান্তর করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহরে বেশি, সেসব ব্যাংককে গ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, পাচারকৃত সম্পদ উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া কোনো সম্পদ উদ্ধার সম্ভব নয়। এজন্য আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনি নথিপত্র তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আদালতের মাধ্যমে যাচাই হোক—আমাদের দাবি যথাযথ কি না। আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই অর্থ উদ্ধার সম্ভব হবে।
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) প্রসঙ্গ তুলে ধরে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থাও রয়েছে। এই পদ্ধতিতেও একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, যেখানে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা আলোচনা করে সমাধান খুঁজবেন।
তিনি জানান, কোন পথে এগোনো হবে, আদালত নাকি এডিআর, সেটি নির্ধারণ করবে সরকার। সরকারের নির্দেশনা পেলেই বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পদ উদ্ধারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে।
গভর্নর বলেন, দেশীয় সম্পদের জন্য দেশের আদালতে এবং বিদেশি সম্পদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের আদালতে মামলা পরিচালনা করতে হবে। এই লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব দলিলপত্র দরকার ছিল, তা আমরা প্রস্তুত করেছি। আন্তর্জাতিক বেশ কিছু ল ফার্ম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা বাংলাদেশে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহী এবং তারা পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কাজ করতে চায়।’
ফার্মগুলোর পারিশ্রমিক কাঠামো নিয়ে প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এলে, সেখান থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত পারিশ্রমিক তারা পাবে। বাকি অর্থ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতার বিষয়েও কথা বলেন গভর্নর। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ভালো। তারা আমাদের পরামর্শ ও সর্বাত্মক সহযোগিতা দিচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এ বিষয়ে অগ্রগতি তুলনামূলক ধীর। দেশটিতে নতুন সরকার আসায় নীতিগত কাজ এখনও চলছে।