অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, ২০২৬ অর্থ বছরের জন্য আগামী বাজেট হবে ‘ব্যবসাবান্ধব সুন্দর বাজেট’।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁও এলাকার রাজস্ব ভবনে সোমবার আয়োজিত অর্থনৈতিক প্রতিবেদন ফোরাম (ইআরএফ) এর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বক্তব্যদানকালে রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এর ফলে সরকার কিছুটা রাজস্ব হারাতে পারে।’ বাজেটের আকার কমিয়ে সাধারণ মানুষকে কিছুটা ছাড় দেওয়ার জন্য অর্থ উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘আমি অর্থ উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি, স্যার দয়া করে বাজেটের আকার কমিয়ে জনগণকে কিছুটা স্বস্তি দিন।
তবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যেসব করদাতা আগে হ্রাসকৃত হারে কর দিচ্ছিলেন আগামী অর্থ বছর থেকে তাদের কমবেশি নিয়মিত হারে কর পরিশোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা নীতিনির্ধারকদের কাছে এটি প্রস্তাব করব, এটি সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।
আবদুর রহমান খান বলেন, দেশে মানসম্পন্ন করদাতার সংখ্যা খুবই নগণ্য। তিনি বলেন, কর আদায় বাড়াতে আমরা আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, পেশাগত উৎকর্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কর ফাঁকিবাজদের ধরতে পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধির কাজ করা হয়েছে।
তিনি দেশে কর ফাঁকি রোধের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন কারণ, এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সম্পর্কে বলতে গিয়ে রহমান বলেন, যদি ইনপুট ভ্যাট ক্রেডিট এবং স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাট হার সঠিকভাবে আরোপ করা যায়, তাহলে অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই হার এক শতাংশেরও কম হবে।
এনবিআর প্রধান বলেন, ২০১২ সালে প্রবর্তিত ভ্যাট আইন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে বিকৃত হয়েছে এবং পরে এই বিকৃতিগুলো মোকাবেলা করার জন্য ২০১৯ সালে সংশোধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাটের ক্ষমতা ছিল হিসাবভিত্তিক এবং চালানভিত্তিক। কিন্তু আমরা তা ধ্বংস করে দিয়েছি। ফলে এখনই বাড়ছে না, আমরা ভ্যাটের মূল শক্তি উপড়ে ফেলেছি, ভ্যাটের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাই।
সম্পদ করের বিষয়টি উত্থাপন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি ১৯৬৩ সালে দেশে ছিল, পরে ১৯৯৯ সালে তা বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি টোটাল সিস্টেমকে ডিজিটালাইজড করতে পারি, সম্পদের মূল্যায়নকে একটি মডেলের আওতায় আনতে পারি, তাহলে এটি অবশ্যই দেশের সম্পদের বৈষম্য কমাবে। এটি রাজস্বের বাড়তি উৎসও হবে।
অবিতর্কিত প্ল্যাটফর্মে জমি ও ভবনের মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সরকার সম্পদের ওপর সারচার্জ থেকে ধীরে ধীরে সম্পদ করের দিকে ঝুঁকবে বলেও ইঙ্গিত দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
আবদুর রহমান খান বলেন, চলতি করবর্ষে ১৫ লাখ করদাতার মধ্যে প্রায় ১০ লাখ করদাতা অনলাইনের মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিয়েছেন এবং তারা কোনো করযোগ্য আয় দেখাননি এবং তাই কোনো কর দেননি।
সভায় ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার জন্য বিদ্যমান সাড়ে তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন।