কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর চানখারপুলে গুলি করে কয়েকজনকে হত্যার অভিযোগে গণহত্যার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ কনস্টেবল সুজন হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (১২ জানুয়ার) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। সেই সাথে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ। এসময় ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, আব্দুস সোবহান তরফদার ও মনোয়ার হোসেন তামিম উপস্থিত ছিলেন।
গত ১ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সুজনকে ১২ জানুয়ারি হাজিরের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী আজ সকালে সুজনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন ভবনের হাজত খানায় আনা হয়।
গত ৫ আগস্ট আন্দোলনে চানখারপুলে বোরহানউদ্দিন কলেজের পাশে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে সুজন হোসেনকে কখনও দাঁড়িয়ে বা কখনও শুয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে দেখা যায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে আজ তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি আগামী ২৩ জানুয়ারি উক্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে।
গত ১ জানুয়ারি ৫ আগস্টে রাজধানীর চানখারপুলে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশের কনস্টেবল সুজন হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
ওইদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ। এদিকে সুজন হোসেনের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়।
গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জাজ্জ্বল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।