শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে মাসে দিনে প্রায় ১ হাজার ট্রাকে সাড়ে ৩৬ হাজার টন চাউল আমদানি হলেও কমেনি খোলা বাজারে চাউলের দাম।
দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকার অন্তবর্তী সরকার বিনা শুল্কে চাউল আমাদানির অনুমতি দেওয়ার পর থেকে গত ১৩ নভেম্বর ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দর হয়ে চাউলের প্রথম চালান আসে ভোমরা স্থল বন্দরে।
চাউল আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারে দাম কমে আসবে বলে মনে করেন এই বন্দরের আমদানিকারকরা। তবে সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারের চাউল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল আমদানির প্রভাব এখনও সাতক্ষীরার চালের বাজারগুলোতে পড়তে শুরু করেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে আমদানি অব্যহাত থাকলে চাউলের দাম কমবে।
সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা সূত্রে, চলতি অর্থবছরের ১৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের সাড়ে ৩৬ হাজার টন চাউল আমদানি হয়েছে। যার আমদানি মূল্য প্রায় ৩২ কোটি টাকা। আমদানিকৃত এ সব চাউলের মধ্যে রয়েছে চিকন বাসমতি, মিনিকেট, মোটা স্বর্না, নুরজাহান এবং জামাইবাবু জাতের চাউল।
উত্তরবঙ্গের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনালী এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ভারত সরকার চাল রপ্তানি শুরু করার পর থেকে অন্যান্য বন্দরের পাশাপাশি ভোমরা বন্দর দিয়ে চাল আমদানি করছে তার প্রতিষ্ঠানটি। তবে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে কেবল আমদানি শুরু হয়েছে। এখনো তেমন প্রভাব পড়তে শুরু হয়নি দেশের চালের বাজারগুলোতে।
সাতক্ষীরা সদরের ধান ও চাউলের সবচেয়ে বড় মোকাম ঝাউডাঙ্গা বাজারের ধান ও চাউল ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন জানান, আমরা সারা বছর এখন থেকে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মোকাম গুলোতে চাহিদা অনুযায়ী দেশি জাতের চাউল সরবরাহ করে থাকি। তবে ভারত থেকে চাউল আমদানি শুরু হওয়ায় আমাদের বেচাকেনা কিছুটা কম। আশা করছি বোরো ধানের মৌসুমে বেচাকেনা বাড়বে।
সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজারের কয়েকজন চাউল ব্যবসায়ীরা বলেন, চিকন আটাশ জাতের চাল কেজি প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা এবং মোটা জাতের চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এ ছাড়া আমদানিকৃত মোটা স্বর্ণা ও জামাইবাবু জাতের চাল ৫০ টাকা, নূর জাহান ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি ইচ্ছে। তবে ভারতীয় চাল আমদানিতে দেশি চাউলের বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি।
সাতক্ষীরা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সালেহ্ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমান সাতক্ষীরার চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ভারত থেকে চাউল আমদানি শুরুর কারণে শিগগিরই চালের বাজার কমতির দিকে আসবে।
ভোমরা স্থল শুল্ক স্টেশন রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শফিউল বসর জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ট্রাকে সাড়ে ৩৬ হাজার টন চাউল আমদানি হয়েছে। সরকার যেহেতু চালের ওপর ডিউটি ফ্রি করে দিয়েছে যার জন্য এখানে কোনো রাজস্ব আদায় হয়নি।