কর্পোরেট ডেস্ব: সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন করেছেন এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর ছিদ্দিকের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার একটি আরজি দায়ের করা হয়েছে। ২৬ নভেম্বরের ঘটনায় এ মামলার আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনও আদেশ হয়নি।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী শামসুল আলম বলেন, ‘গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার সময় এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী মারধরের শিকার হন। দাঁড়ি-টুপি থাকায় চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা তাকে মেরে ডান হাত ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া উনার মাথায় কিরিচ দিয়ে কোপ দিয়েছে চিম্ময়ের অনুসারীরা। এ ঘটনায় চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শুনানির জন্য অপেক্ষামান রেখেছেন।’
বাদী এনামুল হক হেফাজতে ইসলামের একজন সমর্থক বলেও জানান আইনজীবী শামসুল আলম।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিনঘণ্টা আটকে থাকার পর একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে দুর্বত্তরা।
এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জন গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।