নিজস্ব প্রতিবেদক : বড় পতনের মুখে পড়েছে ভারতের পুঁজিবাজার। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বাজারের প্রতিটি মূল্যসূচক কমেছে। গতকালের দর পতনের পর বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক বিএসই সেনসেক্স প্রায় ৩ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। দেশটির অপর স্টক এক্সচেঞ্জ ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের এনইসি নিফটি ৫০ সূচকেও ছিল এক চিত্র।
ভারতের বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশটির অনেক কোম্পানির শেয়ার অতিমূল্যায়িত। এগুলোতে এখন মূল্য সংশোধন চলছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন, তেলের মূল্য বৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্ভাব্য মুদ্রানীতি ইত্যাদিরও প্রভাব পড়েছে বাজারে।
গতকাল সকাল থেকে লেনদেনে মূল সূচকগুলি নিম্নগামী ছিল। সময় যত গড়িয়েছে তত বড় পতনের মুখোমুখি হয়েছে মূল সূচকগুলি। লেনদেন শেষে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স প্রায় ১.১৮ শতাংশ অথবা ৯৪১.৮৮ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৭৮৭৮২.২৪ যা প্রায় ৩ মাস আগে ৭ আগস্টের সমান। এদিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি প্রায় ১.২৭ শতাংশ অথবা ৩০৯ পয়েন্ট কমে হয়েছে ২৩৯৯৫.৩৫ এর স্তরে।
দিন শেষে নিফটি মিডক্যাপ ১০০ এবং নিফটি স্মলক্যাপ ১০০ -এর সূচক প্রায় ১.৯৭ শতাংশ পর্যন্ত নিম্নগামী হয়েছিল। এদিন সেক্টরগুলির মধ্যে প্রতিটি ছিল নিম্নমুখী। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নিফটি ব্যাঙ্ক, নিফটি অটো, নিফটি আইটি, নিফটি পিএসইউ ব্যাঙ্ক, নিফটি ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস, নিফটি ফার্মা, নিফটি এফএমসিজি, নিফটি মেটাল, নিফটি রিয়েলটি, নিফটি মিডিয়া, নিফটি এনার্জি, নিফটি প্রাইভেট ব্যাঙ্ক, নিফটি ইনফ্রা, নিফটি কমোডিটিজ, নিফটি কনজাম্পশন, নিফটি পিএসই, নিফটি সার্ভিস সেক্টর, নিফটি কনজিউমার ডিউরেবলস, নিফটি হেলথকেয়ার এবং নিফটি অয়েল অ্যান্ড গ্যাসের সূচকে। এগুলি যথাক্রমে ০.৮৯ শতাংশ, ০.৯৮ শতাংশ, ০.০৩ শতাংশ, ০.২৪ শতাংশ, ১.২০ শতাংশ, ০.৭৪ শতাংশ, ১.১৬ শতাংশ, ১.৫৭ শতাংশ, ২.৯৩ শতাংশ, ২.১৬ শতাংশ, ২.৬০ শতাংশ, ১.৩২ শতাংশ, ২.১১ শতাংশ, ২.২১ শতাংশ, ১.১৮ শতাংশ, ২.২৭ শতাংশ, ০.৯৮ শতাংশ, ১.০৬ শতাংশ, ০.৩৮ শতাংশ এবং ২.৪৮ শতাংশ নিম্নগামী হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা দ্য ইকোনমিক টাইমসের তথ্য মতে, গতকাল বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির বাজারগত মূলধনের পরিমাণ ৬ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৪৪২ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, এদিন OPEC+ -এর সিদ্ধান্তের জেরে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের মূল্য ১.৮১ মার্কিন ডলার তথা ২.৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেলে হয়েছে ৭৪.৯১ ডলার। মার্কিন WTI ক্রুডের দাম ১.৮৬ ডলার তথা ২.৭ শতাংশ ঊর্ধ্বগামী হওয়ায় তা পৌঁছয় ৭১.৩৫ ডলারে। বাজার সংশ্লিষ্টদের ধারণা আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির ফলেই ভারতের পুঁজিবাজারে বড় ধরণে দরপতন দেখা দিয়েছে।