আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ ৬ বছর পর ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করা হলো রাষ্ট্রপতি শাসন। এবার সেখানে গঠিত হতে চলেছে গণতান্ত্রিক সরকার।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মীরে দীর্ঘ এক দশক পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের জোট। এর ফলে আরও একবার জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ওমর আবদুল্লাহ।
এর মধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরিত নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯-এর ৭৩ নম্বর ধারা, সংবিধানের ২৩৯ ও ২৩৯-এ ধারা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের আগে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সেই সময় সেখানে জারি হয়েছিল কারফিউ। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যে ভরে যায় গোটা উপত্যকা। তবে তারও আগে থেকেই সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি ছিল।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে জম্মু ও কাশ্মীরে পিডিপির সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। তবে সেই সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বিজেপি সমর্থন প্রত্যাহার করেছিল মেহবুবা মুফতির থেকে। এর জেরে সরকার পড়ে যায়। তখন থেকেই সেখানে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।
তবে ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দেওয়া হয়। বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু ও কাশ্মীর। এমনকি, রাজ্যের মর্যাদাও চলে যায়। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
এদিকে, ভোটে জেতার পরই ওমর আবদুল্লাহ বলেছিলেন, আমি সবসময় বলেছি, যারা এই ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে, সেই লোকদের কাছ থেকে এটি ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা করা বোকামি। এটা মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার মতো।
‘তবে আমরা এই ইস্যুটিকে বাঁচিয়ে রাখবো। আমরা আশা করি, একদিন সরকার পরিবর্তন হবে। প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হবে ও এমন একটি সরকার গঠিত হবে, যাদের সঙ্গে আমরা এই বিষয়ে কথা বলতে পারবো ও জম্মু-কাশ্মীরের জন্য কিছু অর্জন করতে পারবো।’
এবারের নির্বাচনে ৯০ সদস্য বিশিষ্ট জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের জোট ৪৮টি আসনে জিতেছে। এর মধ্যে ৪২টি আসনে জয়ী ন্যাশনাল কনফারেন্স, কংগ্রেস জয়ী ৬টিতে। আর পিডিপি জয়ী মাত্র ৩টি আসনে। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২৯টি আসনে। এদিকে সিপিএম ও আম আদমি পার্টি পেয়েছে একটি করে আসন। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস