বিনোদন ডেস্ক : নব্বই দশকে ঢাকাই সিনেমার রোমান্টিক নায়ক হিসেবে আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সালমান শাহ। মৃত্যুর দুই দশকেরও বেশি সময় কেটে গেলেও এই ইন্ডাস্ট্রিতে রোমান্সের কিং বা আইকন এখনো তিনি। তার সেই ক্রেজ, জনপ্রিয়তাকে কেউ টপকাতে পারেননি।
রুপালি পর্দার মতোই বাস্তব জীবনেও নায়কদের চরিত্রের মিল খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে সালমান শাহ রুপালি পর্দার মতোই বাস্তব জীবনেও ছিলেন দারুণ রোমান্টিক। এক পলক দেখেই সামিরাকে ভালোবেসে ফেলা, তাকে নানবিধ প্রেমময় কায়দায় মুগ্ধ করে ভালোবাসায় আবদ্ধ করা, তাকে আপন করে পাওয়ার জন্য নানা পাগলামির অনেক গল্প আজও তরুণদের হৃদয়ে দোলা দেয়।
বিয়ের পর স্ত্রী সামিরার সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তার রাগ ভাঙাতে হেলিকপ্টার ভাড়া করে ফেলার মতো দুর্দান্ত এক প্রেমিক ছিলেন ‘স্বপ্নের নায়ক’ সালমান শাহ। সামিরার সঙ্গে তার সেই প্রেমকে সিনেমার পর্দায় বারবার তুলে আনার দাবি উঠেছে ভক্তদের মধ্যে। অনেক ভক্ত আবার সামিরাকে সালমানের মৃত্যুর জন্য দায়ী মনে করে সেই দাবির বিপক্ষেও কথা বলেছেন।
এমনি মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মুখে বরেণ্য নির্মাতা ছটকু আহমেদ চেয়েছিলেন সালমান ও সামিরার প্রেমকাহিনী সিনেমায় তুলে ধরবেন। ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি সিনেমাটির। নাম ঠিক করেছিলেন ‘স্বপ্নের রাজকুমার’। তবে রোববার, ৬ অক্টোবর ছটকু আহমেদ জানান, এই ছবিটি হচ্ছে না। সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর আপত্তির কারণেই সিনেমাটির নির্মাণ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।
সালমান-সামিরার প্রেমকাহিনি পর্দায় তুলে ধরার পরিকল্পনা ছিল নায়কের প্রথম সিনেমার নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের। সামিরার কাছে তাদের প্রেমকাহিনি শুনে সেই সিনেমার গল্পও সাজিয়েছিলেন তিনি। গত বছর সোহানের মৃত্যু হয়। তাই সহকর্মীর সেই স্বপ্নের কাজটিতে প্রাণ সঞ্চার করতে চেয়েছিলেন ছটকু আহমেদ। শুরু করেছিলেন প্রি-প্রোডাকশন। শিল্পী নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে অডিশনের মাধ্যমে। কিন্তু নীলা চৌধুরী আপত্তির জন্য কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
ছটকু আহমেদ বলেন, ‘আমি সিনেমাটি তৈরি করছি জানতে পেরে কিছুদিন আগে নীলা চৌধুরী লন্ডন থেকে ফোন করেন। তিনি সিনেমাটি বানানো যাবে না বলে জানান। কারণ এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া আছে তাদের। তারপর সিনেমাটির কাজ স্থগিত করেছি।’
সিনেমাটি নির্মাণ করতে না পরার কষ্ট ও আক্ষেপ নিয়ে ছটকু আহমেদ বলেন, ‘এটিকে আসলে সালমানের বায়োপিক বলা যায় না। দুই তরুণ-তরুণীর প্রেমকাহিনি দেখাতে চেয়েছিলাম আমি। যেখানে সালমানের জীবনের একটা আমেজ থাকবে। গল্পে তার মা নীলা চৌধুরীর তেমন ভূমিকা নেই। তবুও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন সিনেমাটি নিয়ে। গল্পটি সামিরার। আপত্তি করলে সে করতে পারতো। নীলা চৌধুরী কেন আপত্তি করলেন আমার বোধগম্য নয়। তবে তিনি সলামানের মা, তার সঙ্গে এসব নিয়ে কোনো বিতর্কে যেতে চাই না আমি।’
সামিরার সঙ্গে সম্প্রকি ছটকু আহমেদের ছবি প্রকাশ হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেসব ছবি দেখার পর সালমানের কিছু ভক্ত গালাগাল করেন সিনিয়র এই পরিচালককে। এ বিষয়টাও মানসিকভাবে আহত করেছে তাকে। সেজন্যও সিনেমাটি না বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের একটি ফ্যাশন শোতে ১৯৯০ সালের ১২ জুলাই সামিরার সঙ্গে প্রথম দেখা হয় সালমান শাহের। সেখানেই পরিচয় থেকে প্রেম ও পরবর্তীতে ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর গোপনে করেন বিয়ে।