আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানপন্থী মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু করে আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোর পর্যন্ত চালানো হামলায় লেবাননের রাজধানী বৈরুতে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ছাড়াও সংগঠনটির আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহর দক্ষিণাঞ্চলীয় ফ্রন্টের কমান্ডারও।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈরুতের দাহিয়েহ এলাকার একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামলা চালিয়ে সেখানকার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লার সদরদপ্তর ধ্বংস করে দেয়। মূলত হাসান নাসরুল্লাহর অবস্থানকে লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হয়।
আইডিএফ জানায়, হিজবুল্লাহর শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ বৈরুতের দক্ষিণে দাহিয়েহ এলাকার হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত একটি আবাসিক ভবনে বৈঠক করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ইসরায়েল ওই বিমান হামলা চালায়।
তবে এ বিষয়ে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে কেউ কোনো ধরনের মন্তব্য করেনি।
এ বিষয়ে আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি বলেন, ‘আমাদের খুব পরিষ্কার বার্তা হলো যে বা যারা ইসরায়েলি নাগরিকদের হুমকি দেবে তাদের আমরা ধরবোই, উত্তর-দক্ষিণ বা তারও বাইরে যেখানেই থাকুক না কেন।’
হাসান নাসরুল্লাহ ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন এমন সংবাদ প্রকাশের পরপরই আইডএফ ৫২ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপটি প্রকাশ করে।
হার্জি হালেভি ভিডিওতে বলেন, ‘খুব সুনির্দিষ্টভাবে ও সঠিক সময়ে আমরা কাজটি করেছি।’ তিনি বলেন, ‘এটাই আমাদের টুলবক্সের শেষ কাজটি নয়, বিষয়টি খুবই পরিষ্কার, আমাদের আরও বহুদূর যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।’
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হাসান নাসরুল্লাহ লেবানন ভিত্তিক শিয়া ইসলামি মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ আন্দোলনের প্রধান নেতা। ইসরায়েলের আততায়ী হামলার আশঙ্কায় তিনি খুব কম সময়ই প্রকাশ্যে আসতেন। গত কয়েক বছরেরর মধ্যে তাকে প্রকাশ্যে খুব কমই দেখা গেছে।
ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা করে চলা হাসান নাসরুল্লাহ লেবাননে হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক ও সামরিক উত্থানের অন্যতম পথিকৃৎ। সব সময় নেপথ্যে থাকা এই ব্যক্তির কারণেই আজ মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ বর্তমান অবস্থানে এসেছে। সংগঠনটির প্রভাব রয়েছে ইরাক ও ইয়েমেনেও। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা এর সামরিক বিভাগ সরাসরি ইরানের কাছ থেকে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র পেয়ে আসছে।
সূত্র- বিবিসি।