October 7, 2024 - 5:34 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeশিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতিতোফাজ্জল হত্যা: ঢাবির ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

তোফাজ্জল হত্যা: ঢাবির ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

spot_img

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রক্টর জানান, এখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ক্লাস শুরু হবে।

ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুমকে পরিবর্তন করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থী হলেন- পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জালাল মিয়া ও আবদুস সামাদ, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আল হোসাইন সাজ্জাদ, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল আলম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ কবির ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আবদুস সামাদ। তাদের মধ্যে ফিরোজ কবির ও আবদুস সামাদ ছাড়া বাকি ছয় শিক্ষার্থীকে হল প্রশাসনের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন– জালাল মিয়া, মোহাম্মদ সুমন, আহসান উল্লাহ, মুত্তাকীন সাকিন, আল হোসাইন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলম।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারপভাইজার মোহাম্মদ আমানউল্লাহ। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। একই সাথে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মামলার এজহারে বলা হয়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৮টায় ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করেন। পরে হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাথাড়ি থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন। পরে ওই যুবক মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়েনর কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তারা অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেল নিয়ে যায়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পথচারী লোকজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, অচেতন যুবকের নাম তোফাজ্জল ও তিনি একজন ভবঘুরে। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে মৃত ঘোষণা করে।

জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।

এর আগে, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলের মর্মান্তিক ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়েছে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় হল প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে এবং এই কমিটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় প্রতিবেদন দিয়েছে। এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় তদন্ত কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত আট অভিযুক্তের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অভিযুক্ত এই আটজনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ