ময়মনসিংহ ব্যুরো : ময়মনসিংহের ভালুকায় অটোরিকশাচালক খালেদ সাইফুল্লাহকে গলা কেটে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪। এ ঘটনায় মোহাম্মদ রবিন মিয়া (২৩) ও কবির হোসেন (৩৫) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের ময়মনসিংহের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ এর একটি দল গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে জেলার গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া এবং ভালুকার ভান্ডাব এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গ্রেফফতারকৃত আসামী ভালুকা উপজেলার ভান্ডাব ধাইরাপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন ও একই গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে রবিন মিয়া গত ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড থেকে উপজেলার রান্দিয়া গ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে খালেদ সাইফুল্লাহর অটোরিকশাটি ভাড়া করে।
পরে রান্দিয়া মুন্সীবাড়ি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছামাত্র কবির হোসেন চালক খালেদ সাইফুল্লাহকে চাকু দিয়ে পেটে আঘাত করে এবং রবিন চালক খালেদ সাইফুল্লাহকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার পাশে ধরে রাখে। ওই সময় কবির হোসেন সাইফুল্লাহকে ছুরি দিয়ে পরপর বেশ কয়েকটি আঘাত করে। এক পর্যায়ে গলায় ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা সাইফুল্লাহর লাশ রাস্তার পাশে একটি ঝোপে ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে মরদেহের খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে ঘটনাস্থল থেকে গলাকাটা অবস্থায় অজ্ঞাত হিসেবে খালেদ সাইফুল্লাহর লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
এদিকে এঘটনার পর পিবিআই পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিহত অজ্ঞাত লাশের পরিচয় সনাক্ত করতে গিয়ে নিশ্চিত হন ওই হত্যাকান্ডের শিকার মোঃ খালেদ সাইফুল্লাহ (২৮)ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার আকুয়া ওয়ারলেস পাড়ার উমর ফারুকের ছেলে।
মোঃ খালেদ সাইফুল্লাহ ভালুকা উপজেলার কাঠালী পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় জেসমিন আক্তারের বাসায় স্বপরিবারে ভাড়া থেকে ভালুকা বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওই ঘটনায় হত্যাকান্ডের শিকার মোঃ খালেদ সাইফুল্লাহ বাবা উমর ফারুক বাদি হয়ে ভালুকা মডেল থানায় হত্যা মামলা (নম্বর-১২) দায়ের করেন।
নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, খালেদ সাইফুল্লাহ বিবাহিত। তার তিন মাসের একটি সন্তান রয়েছে। আনন্দ মোহন বিশ^ বিদ্যালয় কলেজ থেকে অনার্স পাশ করার পর কর্মস্থানের ব্যবস্থা না হওয়ায় খালেদ খালেদ সাইফুল্লাহ বেকার হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি ভালুকায় চলে এসে অটো রিকশা চালিয়ে সংসার চালতেন। লোক লজ্জায় নিজ এলাকা ময়মনসিংহ সদরে অটো রিকশা না চালিয়ে ভালুকায় বাসাভাড়া নিয়ে রিকশা চালাতেন।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্যই খালেদ খালেদ সাইফুল্লাহকে হত্যা করেছে বলে গ্রেফতারকৃত আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের ময়মনসিংহের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।