আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে উজান থেকে বানের পানি ঢুকতে থাকায় বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বাঁধ খুলে দেওয়ার খবর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে দেশটির সরকার বলছে, গোমতির নদীর ওপর নির্মিত ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে এমন খবর প্রচারে আমরা উদ্বিগ্ন। এটি সঠিক নয়। আমরা উল্লেখ করতে চাই, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ডুম্বুর বাঁধটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে বেশ দূরে অবস্থিত। বাংলাদেশ থেকে এটি ১২০ কিলোমিটার দূরে উজানে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। এখান থেকে বাংলাদেশও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায়। প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীপথে আমাদের অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুরা ২-এ তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ সাইট রয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তি সমগ্র ত্রিপুরা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে গত ২১ আগস্ট থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারী প্রবাহের ক্ষেত্রে বাঁধগুলোতে স্বয়ংক্রিয় রিলিজ পরিলক্ষিত হয়েছে। অমরপুর স্টেশন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের অংশ যার অধীনে আমরা বাংলাদেশে বাস্তব সময়ের বন্যার তথ্য প্রেরণ করছি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২১ আগস্ট ভারত সময় দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশকে ক্রমবর্ধমান বন্যার প্রবণতার ডেটা সরবরাহ করা হয়েছে। এদিন ভারত সময় সন্ধ্যা ৬টায় বন্যার কারণে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে যার ফলে যোগাযোগের সমস্যা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা যা উভয় পক্ষের জনগণের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং এর সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
যেহেতু দুটি দেশের ৫৪টি দেশে অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, তাই নদীর পানি নিয়ে সহযোগিতা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানি সম্পদ এবং নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।