কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের ঢলে দেশের ৮ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও কুমিল্লায় তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ জনপদ। খাগড়াছড়িতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সারাদেশের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলার সড়ক যোগাযোগ।
ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭টি ভাঙন অংশে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে একশ গ্রাম। এক মাসের ব্যবধানে তৃতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়লো পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার লাখো মানুষ। বন্ধ যানচলাচল। বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসংযোগ। মহুরী নদীর পানি ঢুকে নোয়াখালীর ৯ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন করে জেলার অনেক এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, বাঁশখালী, সন্দীপসহ বিভিন্নস্থানে বেঁড়িবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সাগরের লোনাপানি প্রবেশ করেছে।
পাহাড়ী ঢলে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, মিরসরায়ের বিস্তুর্ণী এলাকা জলমগ্ন। এছাড়া হলদা, ইছামতি, শঙ্খ এবং ফেনীর নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারীবর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহি:নোঙ্গরে জাহাজ থেকে পন্য উঠানাম বন্ধ রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় বন্ধ রয়েছে লাইটারশিপ চলাচল।
অন্যদিকে মৌলভীবাজারের মনু, ধলাই কুশিয়ারা ও জুড়ী নদী বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বাঁধ ভেঙ্গে কমলঞ্জের ইসলামপুর, আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।
খাগড়াছড়ি শহরের অধিকাংশ এলাকা পানির নীচে। শহরের শাপলা চত্তর, উত্তরগঞ্জ পাড়া,শান্তিনগড়, মেহেদীবাগে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানির নীচে। অনেক এলাকায় মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ঘরের ছাদে। বিদ্যুৎবিহীন জেলা। সারাদেশের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলার সড়ক যোগাযোগ।
এদিকে, কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ওপরে। হবিগঞ্জে পাহাড়ী ঢল আর অব্যাহত বৃষ্টিতে খোয়াই নদীর পানি বেড়ে ভোর রাত থেকে লস্করপুর, জালালাবাদসহ পাচঁটি জায়গায় বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়সহ তলিয়ে গেছে কয়েক শতাধিক হেক্টর সবজিসহ কৃষি জমি।
বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কোস্টগার্ড, বিজিবি, ফায়ারসার্ভিস ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। তবে দুর্গত এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ও পানির প্রবল স্রোত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রম। বেশিরভাগ এলাকার একচালা ও একতলা পাকাঘর ডুবে গেছে। কোথাও আশ্রয় নেওয়ার মতো অবস্থা নেই।
বর্তমানে সেনা ও কোস্টগার্ডের ২৪টি বোট উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। পাওয়া যাচ্ছে না মোবাইল নেটওয়ার্ক। ভিটেমাটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের পথে ছুটছে সবাই।