October 8, 2024 - 3:32 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশশেরপুরে নদী ভাঙ্গনে ফসলি জমি-ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন

শেরপুরে নদী ভাঙ্গনে ফসলি জমি-ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন

spot_img

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বগুড়া শেরপুর উপজেলার করতোয়া নদীর সাতটি পয়েন্টে ব্যপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে করে ফসলী জমি, বসতবাড়ি, গাছপালা ও ভিটা জমি ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ না করলে আরো বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করছে। শেষ সম্বল রক্ষায় বাঁধ নির্মানে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন ভাঙ্গনকবলীতা।

সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় নদীতে ভেঙ্গে যাওয়া জামিল উদ্দিনের সঙ্গে, তিনি জানান, নদীতীরের একঘন্ড জমি থেকে সারা মাসের খাবারের জোগার আসে তার পরিবারের। সর্বনাশা ভাঙ্গনে শেষ সম্বল হারানোর আতঙ্গ তার চোখে মুখে। শুধু তার নয় জমি ভিটামাটি হারানোর তালিকায় মির্জাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াবালা, কবরস্থান ও খানপুর ইউনিয়নের কয়ের খালি, খানপুর দক্ষিন পাড়া এবং সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর উত্তর পাড়া, মাওনা, বিনোদপুর পূর্ব পাড়া করতোয়া নদী পারের মানুষগুলো। ফলে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে গাছপালা বসতবাড়ি ও আবাদী ফসলি জমি। তীব্র ভাঙ্গনে দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষক ও নদীপাড়ের মানুষগুলো।

বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া আব্দুল মোমিন জানান, নদীর পাড়ে কয়েক শতক জমি এই জমিতে বাড়ী করে আছি এটাই আমার একমাত্র সম্বল। সেই জমিটি ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আমি থাকব কোথায় বা আমার পরিবার নিয়ে কোথায় উঠবো।

বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া বেলাল হোসেন জানান, বাড়ী ভেঙ্গে নদীর মধ্যে চলে যাচ্ছে। গাছ, বাঁশ ও বস্তা দিয়েও ভাঙ্গন রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। এখন অন্যের জায়গায় হয়তো আশ্রয় নিতে হবে।

জামিল উদ্দিন আমার শুধু দুই বিঘা জমি। এর মধ্যে প্রায় দেড়বিঘা এবার নদী ভাঙ্গণে নদীর মধ্যে চলে গেছে। এই জমিতে চাষ করেই আমার সংসার চলতো। এখন আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। হাফ বিঘাও যদি নদীতে চলে যায়, পথের ফকির হওয়া ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই।

চান মিয়া জানান, আমার বাড়ীর পাশে ভিটা জমি। সেগুলো নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গাছপালাসহ আমার ভিটা মাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

তোফায়েল আহম্মেদ জানান, আমার বয়সে করতোয়া নদী এত ভাঙ্গতে দেখিনি। এবার নদীটি ব্যাপক আগ্রাসী হয়েছে। এতে আমার দুই বিঘা আঁখ, এক বিঘা পাট, ঘাস ও সবজির চাষ করেছিলাম সব নদী ভাঙ্গনে ভেসে গেল। আমি ব্যপক ক্ষতির মধ্যে পড়লাম।

কামাল হোসেন জানান, প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে এমন ভাঙ্গন দেখিনি। এবার ভাঙ্গনে বাপদাদার ভিটাসহ প্রায় ১ লক্ষটাকার দামি দামি গাছ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙ্গনরোধে সমন্বিত উদ্দ্যোগের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন জিহাদী। তিনি বলেন পানি উন্নয়নবোর্ডকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। দ্রুত তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনু বলেন, ভাঙ্গনকবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেছি। ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা ও ভাঙ্গনরোধে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ