কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামিসহ ৬০ জনের ফাঁসি কার্যকর করা আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
সোমবার (২৪ জুন) ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ডিএমপির তেজগাঁও জোনের শের-ই-বাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মশিউর আজম তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মশিউর আজম বলেন, ‘সাভারের হেমায়েতপুরের জাদুরচর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন শাহজাহান। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’
জানা গেছে, সোমবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়। তার বোন ফিরোজা হাসপাতালে মরদেহ গ্রহণ করেন। আইনগত কার্যক্রম শেষে শাহজাহানের মরদেহ নরসিংদির পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে দাফন করা হবে।
এর আগে ৩৬ মামলার আসামি জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া ৩২ বছর কারাভোগের পর গত বছরের ১৮ জুন দুপুরে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কয়েদি থেকে জল্লাদ বনে যান শাহজাহান।
জানা গেছে, শাহজাহানের মোট ৪২ বছর সাজা হয়েছিল। এর মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করে তিনি ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিনের সাজা রেয়াত পান। প্রায় ৩২ বছরের সাজা শেষে মুক্তি পান তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বজলুল হুদা, আর্টিলারি মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, ল্যান্সার মহিউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাহ উদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ বাংলাদেশের আলোচিত ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছেন শাহজাহান।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্ম নেওয়া শাহজাহান ভূঁইয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
নথি অনুসারে, ১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির জন্য ১২ বছর এবং ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অপর একটি মামলায় ডাকাতি ও হত্যার জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। এ ছাড়া, উভয় রায়ে তাকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড হয় তার।