পুঁজিবাজার ডেস্ক: সরাসরি ঋণ নয়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৩ হাজার কোটি টাকার ‘সভরেন গ্যারান্টি’ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ গ্যারান্টি পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোনো ঋণদাতা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সমপরিমাণ টাকার ঋণ নিতে পারবে আইসিবি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত কয়েক বছরে কয়েক দফায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে তারল্য সংকট মেটাতে সরকারের কাছে ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ চেয়ে আসছিল আইসিবি। তবে আর্থিক সংকটে থাকা সরকারের পক্ষে সরাসরি ঋণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানটির ঋণে সরকার ‘গ্যারান্টার’ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৩১ মার্চ ২০২৩ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিক শেষে আইসিবির কাছে সরকারের ঋণ ছিল ৮১৭ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ আছে ৩১১ কোটি টাকা। গত বছরের জুনের শেষে সরকারের ঋণের পরিমাণও একই ছিল। তবে বেসরকারি ব্যাংকের ঋণ ছিল ৩৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ, চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে আইসিবি বেসরকারি ব্যাংকের ৪৬ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে।
আইসিবি প্রকাশিত গত ৩০ মার্চ ২০২৩ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে প্রতিষ্ঠানটির কর-পরবর্তী ২৬৭ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে কর-পরবর্তী ৪৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা ছিল।
এই লোকসানের কারণে ছিল গত বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ঋণ ও ডিপোজিটের বিপরীতে সুদ বাবদ আইসিবির ব্যয় ছিল ৬৭৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে, আইসিবির নিজে ১৩৬ কোটি টাকা সুদ আয় করেছে। এতে সুদ বাবদ নিট ব্যয় দাঁড়ায় ৫৩৮ কোটি টাকা।
সুদ বাবদ বড় অঙ্কের ব্যয়ের বিপরীতে শেয়ার কেনাবেচা ও লভ্যাংশ বাবদ আয় কমায় তার প্রভাবে লোকসান হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ আয় হয়েছে ২৮৭ কোটি টাকা, যা গত হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৩১৬ কোটি টাকা। এ সময়ে শেয়ার বিক্রি থেকে নিট ১০৫ কোটি টাকা ক্যাপিটাল গেইন বা মূলধনি মুনাফা হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ২০৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্রোকারেজ আয় ১৩৫ কোটি টাকা থেকে কমে ১১৩ কোটি টাকায় নেমেছে।
ঋণ করে পুরোনো ঋণ পরিশোধের কারণ ব্যাখ্যায় আইসিবির এমডি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকের ঋণের সুদহার অনেক বেশি। সরকারের গ্যারান্টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অপেক্ষাকৃত কম সুদে ঋণ মিলবে। এতে সুদ ব্যয় বাবদ খরচ কমবে।