সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: ২০২২-২৩ শিক্ষাবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূল্যায়নের ফলাফল প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এতে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকায় ৭৫ দশমিক ৯৮ পেয়ে ২৩তম স্থান লাভ করেছে বিশ্বকবির নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। গতবছর ৫৬ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট অর্জন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ বছর ১৯ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বেশি পেয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ইউজিসির সচিবালয় এবং প্রশাসন বিভাগের সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়’।
উল্লেখ্য, গত বছর ওয়েবোমেট্রিক্সের র্যাংক অনুযায়ী নবীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করেছিল। আশা করা যায় এবারের র্যাংকিংয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও টপকে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এছাড়াও, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের জিএসটি গুচ্ছ তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়’।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অবকাঠামো না থাকলেও শ্রেণিকক্ষভিত্তিক পাঠদানের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ধারায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুন মাসে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সফলভাবে প্রথম আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষিত নিয়ে গবেষণার প্রবণতা এবং আগ্রহ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাবেদ ইকবাল।’
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও গবেষক প্রফেসর ড. মো: শাহ্ আজম। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্ব, নিরলস পরিশ্রম ও উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তির মাধ্যমে একদল তরুণ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একত্রিত প্রচেষ্টায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এপিএ তে বিভিন্ন সূচকে পূর্বের তুলনায় অগ্রসরমান হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান নুসরাত জাহান।’
উল্লেখ্য, ৩ সেপ্টেম্বর (রবিবার) রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ৫টি বিভাগে প্রথমবর্ষে ভর্তিকৃত নবীন শিক্ষার্থীদের অভিষেক সম্পন্ন হয়েছে। নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী আকলিমা খাতুন বলেন, ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সাংস্কৃতিক মনায় নিজেকে প্রভাবিত করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত বোধ করছি। ওরিয়েন্টশনের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দেখে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে আমার পছন্দের তালিকায় অগ্রাধিকার দিয়েছি কারণ এখানে সাংস্কৃতিক ধারায় সাহিত্য শেখানো হয়’।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে’ ভর্তি হতে পেরে গর্ববোধ করছি। বিভাগে প্রথম দিনে ক্লাস করতে পেরে মনে হয়েছে এখানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ পাবো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেকে দেখে আনন্দ পাচ্ছি’। ইউজিসির এপিএ মূল্যায়নে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ছয় ধাপ এগিয়ে যাওয়াতে তারা উচ্ছাস প্রকাশ করেন।’
এপিএ মূল্যায়নের বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: শাহ্ আজম বলেন , “বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের শিক্ষকেরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, যেন কবিগুরুর নামের প্রতি সুবিচার করা সম্ভব হয়। আমাদের এ অর্জন নিঃসন্দেহে আমাদেরকে উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে অনুপ্রেরণা দিবে। তবে, আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন, আমরা তা বাস্তবে রূপদান করতে সমর্থ হবো।
আমরা আশা করি, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় খুব দ্রুত বাংলাদেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নিজের জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে।”