কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বিশ্বনেতাদের চিঠির বিষয়ে সরকার চিন্তিত বা চাপে নেই বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। চিঠিতে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান দুঃখজনক। যারা এই আবেদনে শামিল হচ্ছেন তারা তাদের খ্যাতির প্রতি ন্যায়বিচার করেছেন বলে আমার মনে হয় না।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে কোরিয়ান দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। তারা যেটা মনে করেন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তাই করেন। বিচার বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবেন এবং বিচার চলবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি কি আছেন যার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটা তদন্ত করা যাবে না? একজনকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে, এটা হতাশাজনক।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস বা তার লোকজন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনও অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন। এতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এ মামলার সঙ্গে ওটার কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, অতীতেও কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক মর্যাদা শুধু তার গুণের কারণে হয়েছে, তা নয়। এর পেছনে অনেক বিনিয়োগ আছে। আমি ওদিকে যেতে চাই না। আর এটা সরকারের বক্তব্য নয়, আমার নিজের বক্তব্য।
আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ড. ইউনূসের দূরত্ব কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহরিয়ার আলম বলেন, আপনারা ১/১১ ঘটনা প্রবাহ জানেন। তারপরে গত ১৫ থেকে ১৭ বছরের আমাদের দিক থেকে কিছু নেই। কিন্তু আমরা যেটা দেখেছি, সেটার প্রতিফলন আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে। যেখানে দুই পাতা ভাড়া করতে অন্ততঃপক্ষে মিলিয়ন ডলার লাগে। সেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে একটা পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মতো স্বাক্ষর নেওয়া হয়, যে স্বাক্ষরের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি বা তার লোকজন এখনও অর্থ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু এ মামলার সঙ্গে ওটার কোনো সম্পর্ক নেই।
ড. ইউনূস ইস্যুতে বিদেশি বন্ধুদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সঠিক তথ্য সরবরাহ করব। অতীতেও আমরা করেছি। এখনও আমাদের দূতাবাসগুলো করে যাচ্ছে। আমরা তাদের কাছে এটার যতটুকু জানি তুলে ধরব।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেলজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিচারের নামে হয়রানির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে শেখ হাসিনার কাছে ১০০ জনেরও বেশি নোবেল পুরস্কারজয়ীসহ ১৭৫ জন বিশ্বনেতা খোলাচিঠি লিখেছেন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসনের মতো ব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুন:
একনেকে ১৪ হাজার কোটি টাকার ২০ প্রকল্প অনুমোদন
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপে সুযোগ নিচ্ছে চীন, উদ্বেগ ভারতের