চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে চলাচলের জন্য গাড়ির টোল নির্ধারণ করেছে। প্রস্তাবিত এই টোলের হার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, টানেলের ভেতর দিয়ে যেতে প্রাইভেট কার, জিপ ও পিকআপ এর জন্য দিতে হবে ২০০ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। ৩১ বা তার চেয়ে কম আসনের বাসের জন্য ৩০০ টাকা এবং ৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসনের বাসের জন্য ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।
৫ টনের ট্রাক ৪০০ টাকা, ৫ থেকে ৮ টনের ট্রাকের জন্য ৫০০ টাকা, ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাক ৬০০ টাকা, ট্রাক (তিন এক্সেল) ৮০০ টাকা, ট্রেইলর (চার এক্সেল) ১০০০ টাকা এবং চার এক্সেলের বেশি ট্রেইলরের জন্য ১ হাজার টাকার সাথে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ টাকা বাড়তি টোল দিতে হবে।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শাহ আমানত সেতু ও দেশের বিভিন্ন সেতুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোলের হার নির্ধারণ করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় ভেটিং করবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পেলে টোল নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (উন্নয়ন) মো. আবুল হাসান জানান, টানেলের ভেতরে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি চলাচলের বিষয়টি আপাতত বিবেচনায় নেই। মূলত টানেলের নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
টোল নির্ধারণ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু টানেল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাতায়াত সহজ করবে। নগরের ভেতর যানজট কমাতে এই পথে কক্সবাজার থেকে ঢাকা কিংবা অন্যান্য জেলার সঙ্গে যোগাযোগে দূরত্ব ও সময় দুটোই বাঁচবে। তবে টানেলের টোল নির্ধারণ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। ঢাকা-কক্সবাজারে যাতায়াতে টানেলের বিকল্প শাহ আমানত সেতুও আছে। তাই বিকল্প সেতুর টোল পর্যালোচনা করেই টানেলের টোল নির্ধারণ করতে হবে। অতিরিক্ত টোল নির্ধারণ করলে টানেলের সুফল পাওয়া যাবে না’।
টানেলের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশ ‘সি-তে বলা হয়েছে, চালু হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে ২০২৫ সালে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। এছাড়া ২০৩০ সালে প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সালে ১ লাখ ৬২ হাজার গাড়ি চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে এই টানেল। এ প্রকল্পে ২ শতাংশ হার সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকি ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।