নিজস্ব প্রতিবেদক : সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ। এসময়ে সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৭৯২ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু ১৪৬ জনের এবং মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২৫ হাজার ৭৯২ জন।
বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকার ৯২২ জন এবং ঢাকার বাইরের ৮৭০ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫ হাজার ৫৫২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫ হাজার ৭৯২ জন। সুস্থ হয়েছেন ২০ হাজার ৯৪ জন। মারা গেছেন ১৪৬ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ১১৩ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, শক সিন্ড্রোমের কারণে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। তাই অবহেলা না করে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর বর্ষা মৌসুমের আতঙ্ক নয়। ফলে এর ভয়াবহতা বাড়ছে। এটি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে হয়তো রক্ষা পাব, না হলে ডেঙ্গু এবার মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।
গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। তবে এবার ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্টরা। জুলাইয়ের তুলনায় আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।