কর্পোরেট ডেস্ক : চিকিৎসা বিজ্ঞানে অভিনব সাফল্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। অসাধ্য সাধন করলো হাসপাতালটির চিকিৎসকরা। ব্রেনডেথ ব্যক্তির দান করা দুটি হাত সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করা হলো ২৭ বছরের এক যুবকের শরীরে।
কিডনি, হৃদপিণ্ড, চোখ প্রতিস্থাপন এখন আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রতিদিন ঘটে। পূর্ব ভারতে এই প্রথম মৃতপ্রায় ব্যক্তির হাত জীবিত ব্যক্তির অঙ্গে প্রতিস্থাপন হলো। কিন্তু এটি ভারতের মধ্যে ১৫তম ঘটনা।
এই ধরনের ট্রান্সপ্লান্টকে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট বলে। শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল ৫টা থেকে থেকে শুরু হয়েছিল অস্ত্রোপচার। এরপর ২২ ঘণ্টা ধরে চলে ডাক্তাদের চেষ্টা।
৩২ জনের একটি মেডিকেল টিম তৈরি করে অসাধ্য সাধন করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এরপর ওই যুবককে ভেন্টিলেশনে রেখে দেওয়া হয়েছিল। পরে ভেন্টিলেশন খুলে বর্তমানে ওই যুবককে রাখা হয়েছে সিসিইউ-তে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের অধীনে চিকিৎসাধীন আছে ওই যুবক। আপাতত তার শরীরের অবস্থা স্থিতিশীল।
কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালের ডিরেক্টর মণিময় বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ ধরনের হাত প্রতিস্থাপন এখানে প্রথম। সরকারি হাসপাতালে দক্ষতা দিয়েই এই কাজ সম্ভব হয়েছে। রাত তিনটায় শেষ হয়েছে মূল অস্ত্রোপচারের কাজ। সবাই সতর্ক আছি।
জানা গেছে, হরিপদ রানা নামের ৪৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি গত ৯ জুলাই উলুবেড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনার পর প্রথমে তাকে ভর্তি করা হয় উলুবেরিয়া হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ট্রমা কেয়ারে নিয়ে আসা হয়।
গত ১৩ জুলাই হরিপদ রানার ব্রেনডেথ হয়েছে বলে তার পরিবারের সদস্যদের জানান হাসপাতালে চিকিৎসকরা। ব্রেনডেথ ঘোষণা হওয়ার পরেই তার একসঙ্গে পাঁচটি অঙ্গদান করে নজির সৃষ্টি করলেন হাওড়ার হরিপদ রানার স্ত্রী স্বপ্না রানা। স্বামীর দেহ দানের স্বীকৃতি পত্রে সই করেন তিনি।
স্বপ্না রানা জানান, কিডনি, চোখ বা হৃদপিণ্ড নয়, তার অন্য অঙ্গগুলো যাতে অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করা যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য হাসপাতালের ডিরেক্টর মনি বন্দোপাধ্যায়কে জানাই। তারপর হাসপাতালে সাহায্যে হার্ট, লিভার, কিডনি, স্কিন ও হাত দান করা হয়। অঙ্গদান করা হয় এসএসকেএম-এ। গ্ৰিন করিডর করে হরিপদের হার্ট নিয়ে আসা হয় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।