কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের দায়ে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ। এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা আইনের ৮ ধারা মোতাবেক প্রশাসন ভবনের ২০২ নম্বর কক্ষে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রাক্তন সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।
প্রক্টর জানান, ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ‘স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট’ অনুযায়ী অভিযুক্তদের এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে এটা সর্বোচ্চ শাস্তি। এই সময়ে বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ কোনো কিছুতেই অংশ নিতে পারবেন না। আগামী ১৯ জুলাই এই সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ।
এর আগে, গত ১২ জুন ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে মৌখিক বক্তব্য দিতে ক্যাম্পাসে আসেন সাময়িক বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী। কমিটির কাছে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়ার পরও কোনো বক্তব্য থাকলে তা জানতে এই বক্তব্য গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনেরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এ সময় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, আমি আগে থেকে ধরেই নিয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি ন্যায়বিচার পাবো না। তবে ছাত্রত্ব বাতিলের বিষয়ে চিঠি হাতে পাই, এরপর মন্তব্য করবো।
উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সব কমিটিই ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় হাইকোর্টের নির্দেশে পাঁচ ছাত্রীকেই সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া হল প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকেও তাদের বহিষ্কার করা হয়।