কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান তার ছেলে রাফাতের জঙ্গিবাদে জড়ানোর বিষয়টি জানতেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের সিটিটিসি বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান স্বীকার করেছেন তার ছেলে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সঙ্গে জড়িয়েছেন। ছেলে রাফাত সাদিক সাইফুল¬াহর জঙ্গিবাদে জড়ানোর বিষয়টি তিনি জানতেন।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জামায়াতের আমির এসব কথা স্বীকার করেছেন। তবে শফিকুর ছেলের জঙ্গিবাদে জড়ানোর বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাননি।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের যে সংজ্ঞা, সে অনুযায়ী, আপনার ছেলে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে, আপনি সেটা জানতেন, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাচ্ছেন না, সেটিও কিন্তু অপরাধ। তার ছেলে হিজরত করেছে, তার ছেলে একটা গ্রুপসহ বান্দরবানের পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা করেছে। কিন্তু যেতে না পেরে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তাকে (ছেলেকে) নিরাপদে ফিরিয়ে আনার সব ব্যবস্থা তিনি (শফিকুর রহমান) করেছেন। এটা সন্ত্রাসবাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা।
অনেককেই জঙ্গিবাদ থেকে ফিরিয়ে আনার বা আসার সুযোগ পুলিশ দিয়েছে। অনেক উদাহরণ আছে। এ ক্ষেত্রে সে রকম কিছু হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মনে করে, এই ছেলে জঙ্গিবাদ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়, পরিবার আবেদন করে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু বাবা শফিকুর রহমানই তো জানতেন ছেলে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন। পুরো বিষয়টি তিনি গোপন করেছিলেন।
গত ৯ নভেম্বর দুপুরে সিলেট এলাকা থেকে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগে জামায়াত আমিরের ছেলে চিকিৎসক রাফাতকে গ্রেফতার করে ডিএমপির সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিট। সিটিটিসি বলেছে, গ্রেফতারকৃত রাফাত নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিল।
নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, ছেলের জড়ানো, ছেলেসহ জড়িতদের হিজরতে ব্যয়ভার বহনের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানকে ১৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে সিটিটিসি।
শফিকুর রহমান দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বুধবার সাত দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে ৮ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের পরিদর্শক আবুল বাশার। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিট ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।