অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : ৬ মাসের ব্যবধানে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ২৪০ কোটি ডলার কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে ইডিএফের আকার কমিয়ে ৪৬০ কোটি ডলারে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, মে মাসে ইডিএফের আকার ২৩ কোটি ডলার কমিয়ে ৪৭৭ কোটি ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। এরপরে রোববার (৪ জুন) আরও ১৭ কোটি ডলার কমানো হয়েছে। এরফলে ইডিএফ ফান্ডের আকার ৪৬০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম দিকে এই ইডিএফের আকার ছিল ৭ বিলিয়ন ডলার। এরপর মার্চের মাঝামাঝি সময়ে এর আকার কমিয়ে ৫৫০ কোটি ডলারে নামানো হয়। ইডিএফের আকার এপ্রিল মাসে ৫০০ কোটি ডলারে এবং মে মাসে ৪৭৭ কোটি ডলারে কমিয়ে আনা হয়।
আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল রিজার্ভের অর্থ দিয়ে গঠিত ৭ বিলিয়ন ডলার ইডিএফের আকার ধাপে ধাপে কমিয়ে রিজার্ভ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে ইডিএফের এই ৭ বিলিয়ন, আরও কয়েকটি তহবিল ও শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ এবং দু-তিনটি প্রকল্পে রিজার্ভ থেকে দেয়া ঋণসহ মোট ৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থেকে আলাদা করে নিট রিজার্ভের হিসাব করার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। এসব শর্ত মানতে গিয়ে ইডিএফ ফান্ড কমানো হচ্ছে।
কারণ হিসেবে আইএমএফ বলে, কোনো দেশের আপৎকালীন সংকট মেটানোর জন্য রিজার্ভ রাখা হয়। কিন্তু এই ৮ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ চাইলেই যখন-তখন খরচ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল। এজন্য চলতি জুন থেকে আইএমএফের শর্ত মেনে নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ১ হাজার ২৭৩ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। ফলে জুনের প্রথম দিন পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার।
বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। এর মধ্যে বর্ধিত ঋণ সুবিধা ও বর্ধিত তহবিল সুবিধার আওতায় ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার এবং নতুন গঠিত তহবিল রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের তিন দিন পরই প্রথম কিস্তিতে ছাড় করে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে ৩ বছরে মোট ৭ কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ দেবে আইএমএফ।