অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মসলার দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে কাজ করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার (২৯ মে) থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের মসলার বাজারগুলোতে ভোক্তা অধিদপ্তরের কঠোর অভিযান শুরু হবে।
রোববার (২৮ মে) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে মসলার দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান সংস্থার মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আসন্ন কোরবানির ঈদে মসলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে সোমবার থেকে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সারা দেশে মসলার বাজার নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হবে। আমরা এক সপ্তাহ সেটা নজরদারিতে রাখব। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ও আমাদের মনিটরিংয়ে প্রাপ্ত তথ্য সমন্বয় করে একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বন্দরে মসলা খালাসের ক্ষেত্রে সমস্যার বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরকে অবহিত করলে, তা সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।’
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আদার দাম প্রসঙ্গে বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমরা বাজার মনিটরিং করেছি। ঢাকার বাজারও পর্যবেক্ষণ করছি। যেসব পাইকারি প্রতিষ্ঠান ক্রয়মূল্যের রশিদ ছাড়া পণ্য বিক্রি করে, তাদের নাম ভোক্তা অধিদপ্তরকে জানাতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নেব।’
ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর শাহরিয়ার বলেন, ‘কোরবানির আগে যারা বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, তাদের রুখে দিতে টানা অভিযান চালাবে ভোক্তা অধিদপ্তর। এবারের অভিযান হবে কঠোর ও ব্যতিক্রমী। অভিযানে কোনো দোকানে মূল্যতালিকা না থাকলে ওই দোকানকে জরিমানা এবং কম করে হলেও একদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া দোকানগুলো ক্রয়মূল্যের রশিদ দেখাতে না পারলে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
সভায় সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মসলার বাজারে অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘মৌলভীবাজারের মসলা ব্যবসায়ীরা মূল্য তালিকা ঝোলান না। কোথা থেকে কত দামে এনেছেন, তা-ও জানাতে চান না। ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করেন। এখানে আমাদের কাজ করার জায়গা আছে। মসলার দোকানে টেক্সটাইল কালার ব্যবহার করতেও দেখছি। ফুডগ্রেড কালার নয়।’
অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে খাতুনগঞ্জের মসলার বাজার সম্পর্কে সভাকে জানান। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে চায়না আদা মার্কেটে তেমন নেই। আর বার্মিজ ও ভারতের আদা ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে, যা খুচরা বাজারে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য পর্যাপ্ত মসলার মজুত রয়েছে।’
নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার, শাহ আলী মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাড়া-মহল্লার দোকানে মসলার বাজারে পর্যাপ্ত শৃঙ্খলা নেই, যা সামগ্রিকভাবে মসলার বাজারে প্রভাব ফেলছে। তাদের মতে, বন্দরে মসলা খালাসের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় লাগে, যা মসলার মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলছে। এছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্রয় রশিদ দেন না। খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার কঠোরভাবে তদারকির অনুরোধ জানান।