মুহাম্মদ সালাহ উদ্দীন : করোনাকালের ৯০ দিন পার হলো আমাদের দেশের, করোনা ভাইরাসের সাথে কিভাবে বাঁচতে হবে তা ও শিখতেছি আমরা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারবো কি ঠিকে থাকতে অদৃশ্য করোনা ভাইরাসের সাথে? দীর্ঘদিন লক ডাউনের পর সামগ্রিক বিষয় চিন্তা করে সরকার লক ডাউন তুলে দেয়। সরকারী বেসরকারী অফিস, মার্কেট, শিল্পকারখানা, কলকারখানা, গণপরিবহন সবকিছু আবার আগের রুপে ফিরে আসে। কিন্তু এবার নতুন সঙ্কা যুক্ত হয়ে, সেটা হচ্ছে করোনা ভাইরাস! সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে কিন্তু তা কি রক্ষা করা সম্ভব এই জনবহুল দেশে?
মানুষ কাজকর্মে যুক্ত হওয়ার ফলে করোনার ঝুঁকি বাড়ছে প্রতিনিয়ত, সবকিছুর পরিবর্তন হলে ও চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিবর্তন হয় নি , লক ডাউন তোলার কারণে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বা করোনা রোগী বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সে অনুযায়ী করোনা চিকিৎসার বিস্তৃতি না বাড়ানোটা সত্যিই উদ্ভেগজনক!
লক ডাউন খোলার পর তার বেশি প্রভাব পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে, একে তো চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা (সিন্ডিকেটে বন্দী সব প্রাইভেট মেডিকেলগুলো) অন্য দিকে বড় ভোগান্তি করোনা টেষ্টে! করোনা টেষ্ট রিপোর্ট পেতে বেশিরভাগই ৮/১০ দিন সময় লাগতেছে। একজন অসুস্থ ব্যাক্তি করোনা উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্রই টেষ্ট করতে যায় না, সিদ্ধান্ত নিতে নিতে ৩/৪ দিন সময় নেয় তারপর টেষ্ট করায়,
আর রিপোর্ট হাতে পেতে আরো ১০ দিন। টেষ্টের জটিলতার কারনে তৎমধ্যে তার ১৪ দিন অতিক্রম হয় বা আইসোলেশন সময়কাল শেষ হয়। এর মধ্যে যাদের রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা আছে তারা স্ব-চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেন অন্যথায় করোনা আক্রান্ত অসুস্থ ব্যাক্তি রিপোর্ট পেতে পেতে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নেন চিরতরে। স্বজনদের বোবা কান্নায় রেখে।
কারণ শ্বাসকষ্টের রোগিকে করোনা টেষ্ট রিপোর্ট ছাড়া কোন হাসপাতালে ভর্তি করানো যায় না। সে রিপোর্ট নেগেটিভ হোক আর পভেটিভ হোক করোনা রিপোর্ট লাগবেই! এই যেন এক অমানুষিক দুর্ভোগ চট্টগ্রামের! যে অসুস্থ ব্যাক্তির রিপোর্ট ৮/১০ দিন পর আসে
তার করোনা পজেটিভ আসা মানেই কয়েকশ ব্যাক্তির মধ্যে করোনা পজেটিভ ছড়িয়ে দেয়া।
তাছাড়া টেষ্টে ভোগান্তি, রিপোর্ট জটিলতার কারণে অনেকে করোনা টেষ্ট করাচ্ছে না বা টেষ্ট করালে ও রিপোর্ট হাতে পেতে শ্বাস কষ্টে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। চট্টগ্রামকে করোনার ছোবল থেকে রক্ষা করার জন্য সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থার অতীব প্রয়োজন। করোনা টেষ্ট রিপোর্টের জটিলতা বা সময় ক্ষেপন দূর করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে খুব দ্রুত। তা না হলে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর মিছিল বাড়তেই থাকবে।
লেখক ও কবি, চট্টগ্রাম