অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : নকল ও ভেজালকারী ব্যবসায়ীদের কালো তালিকাভুক্ত করতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হূমায়ূন। সকল ব্যবসায়ী নকল ও ভেজালের সাথে যুক্ত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ভালো ব্যবসায়ী আছেন, যারা আন্তর্জাতিক মানের পণ্য বাজারজাত করে বিশ্ব বাজারে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছেন। কিন্তু কিছু নকল ও ভেজালকারী ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা এ হীন কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উচিত তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করে বাদ দেয়া।
শনিবার (২০ মে) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রধান কার্যালয়ে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত ‘পরিমাপ বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার সহায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন শিল্পমন্ত্রী।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মাদ নাজমুল হক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ রায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক মোঃ আবদুস সাত্তার।
সূচনা বক্তব্য দেন বিএসটিআই পরিচালক (মেট্রোলজি) প্রকৌশলী সাজ্জাদুল বারী। বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ রুহুল আমিন রাসেল। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএটিআই’র পরিচালক (মেট্রালজি) প্রকৌশলী সাজ্জাদুল বারী।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি পণ্য যেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সমাদৃত হয়, আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি’। বিএসটিআই সফলভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নকল ও ভেজালরোধে তিনি সরাসরি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে বিএসটিআই’র অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও ওজনে কম দিলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এমনকি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, পবিত্র রমজানসহ বছরব্যাপী বিএসটিআই ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে প্রশংসা অর্জন করেছে। এই অভিযান তৃণমূল পর্যায়ে পরিচালনা করতে হবে। বিএসটিআই তার কাজ করে যাচ্ছে। তবে, ব্যবসায়ীদেরও উচিত বিএসটিআইকে এ কাজে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করা।
শিল্প সচিব বলেন, নকল ও ভোজালরোধে যে আইন রয়েছে তার কঠোর প্রয়োগ হলে নকল ও ভেজাল অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব। সম্পদ ও জনবলের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও সর্বোচ্চটুকু দেয়ার মানসিতা নিয়ে কাজ করে গেলে কোন কিছু কঠিন নয় বলেও তিনি মনে করেন।
এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, খাদ্যে ভেজাল সম্ভবত বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। এরফলে নানা জটিল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
ভেজাল ও নকল প্রতিরোধে বিএসটিআই’র সক্ষমতা ও নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি ভেজাল ব্যবসায়ীদের তিনি সুস্থ ব্যবসায়ীক ধারায় ফিরে আসার আহবান জানান।
বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ইনস্টিটিউশনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, মানচিহ্ন নকল ও অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত লাইসেন্স, পণ্যের হালাল সনদ, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাই করে সনদ প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে।
তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআই’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন, নতুন জনবল সৃজন, পণ্য পরীক্ষায় আন্তর্জাতিকমানের নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং বিদ্যমান ল্যবরেটরিগুলোর নতুন পণ্য পরীক্ষণ প্যারামিটার সংযুক্তির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন:
বেসরকারি শিল্পখাতে সিআইপি সম্মাননা পাচ্ছেন ৪৪ ব্যক্তি