April 29, 2025 - 5:05 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeবিশেষ প্রতিবেদনদরিয়ানগর শেকড়ের উপলদ্ধি এবং বিশ্বময় শান্তির অভিযাত্রা

দরিয়ানগর শেকড়ের উপলদ্ধি এবং বিশ্বময় শান্তির অভিযাত্রা

spot_img

বদরুল ইসলাম বাদল : মানব জাতির উন্নতি ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে বিশ্বকে বাসযোগ্য স্থায়ী শান্তির নিবাস হিসেবে গড়ে তোলা সকল জাতি গোষ্ঠীরই দায়িত্ব। প্রকৃত পক্ষে কোন মানুষ অশান্তি চায় না। হিংসা, সন্ত্রাস, বর্বরতা, হানাহানি, সংঘাত, সংঘর্ষ, যুদ্ধবিগ্রহ চায় না। তবে প্রধান চাওয়া শান্তির পৃথিবী হলে ও স্বার্থান্বেষী মহলের উদ্দেশ্যমুলক আচরণ এবং দাম্ভিকতায় শান্তির পৃথিবী হয়ে উঠছে অশান্ত। দীর্ঘদিন থেকে ফিলিস্তিন সমস্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য। সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন সহ বহুদেশ অস্থির অশান্তিতে মানুষের কান্নায় বিপন্ন মানবতা। আমাদের ঘাড়ের উপর রোহিঙ্গা বোঝা।

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধ মানবতার বিরুদ্ধে একবিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অদৃশ্য করোণা ভাইরাসে ক্ষতবিক্ষত অস্থিতিশীল পৃথিবীর ক্ষত এখনো শুকায়নি। মানবজাতিকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে চেষ্টা করছে বিশ্বের প্রতিটি জাতিগোষ্টি। আশাহতের বিষয় হলো, মহামারী সমস্যা শেষ না হতেই বেজে উঠে সেই যুদ্ধের দামামা, মানববিধ্বংসী অস্ত্র তৈরী এবং কেনাবেচার মহাযজ্ঞ। যা কোন অবস্থাতেই থামানো যাচ্ছে না। বিশ্বফোরামের আলোচনার টেবিলে বড়ো বড়ো সেমিনার সিম্পোজিয়ামে শান্তির সূত্র নিয়ে জ্ঞানগর্ব আলোচনা, গতিপ্রকৃতি নিয়ে বিশ্লেষণ এবং সিদ্ধান্ত হচ্ছে। কিন্তু তা বাস্তবায়নে অগ্রগতির খবর চরম হতাশার।সীদ্ধান্ত ফাইল বন্দী হয়ে কোমায় পড়ে যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, “মানবজাতির সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘ এবং তার অঙ্গসংগঠন গুলো আজ যেন বিশ্বনেতাদের ভাষণমঞ্চ হয়ে উঠেছে। কিছু বক্তব্য বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা ছাড়া গুনগত ইতিবাচক কার্যক্রম খুবই নগন্য”।

সাম্প্রতিক কালের ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তার স্পষ্টতা প্রতীয়মান। মহামারীর পর বিশ্বে দুর্ভিক্ষের আগাম সতর্ক সংকেত নিয়ে বিশ্ববাসী আতঙ্কিত, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নীতিবির্ধারক মহল খাদ্য উৎপাদন নিয়ে সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছেন, এসময়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতা পৃথিবীর জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। আগে বাচাঁতে হবে পৃথিবী এবং তার মানুষদের। তবুও থামছে না কিছুতেই আক্রমণাত্মক বক্তব্য,হুংকার। এসব উত্তেজনা নিয়ে কেউ কেউ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশংকার কথা বলছে। কিন্তু আমরা শান্তি চাই, তাই শান্তির জয়গান করি। বিশ্বের ক্ষমতাধর পরাশক্তি সমূহ নিজেদের শক্তি এবং আগ্রাসী মনোভাবকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে সমযোতায় আসতে পারছে না। তাই সংকট উত্তরণে বিশ্ববাসীকে রক্ষায় দরকার একজন প্রজ্ঞাবান রাজনৈতিক নেতা। যিনি তার প্রতিভা এবং ক্যারিশমা দিয়ে শান্তির পৃথিবী গড়ে তোলা নিয়ে সকল জাতি গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে।

বাঙালী জাতি সবসময় শান্তিময় পৃথিবী চায়। স্বাধীনতা লাভের পরথেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্বশান্তির পক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য এবং দৃঢ অবস্থানের জানান দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তিনি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর আত্মনির্ভরতা এবং অধিকার আদায়ের কথা বলেছেন।শোষিত বঞ্চিত অধিকার হারা স্বাধীনতাকামী মানুষের পক্ষে দাবি আদায়ে সোচ্চার ছিলেন তিনি। পৃথিবীর প্রতিটি কোণায় সাম্য -মৈত্রী গনতন্ত্র রক্ষা আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন। যার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তার জীবদ্দশায় “বিশ্বশান্তি পরিষদ” তাকে “জুলিও কুরি” শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেন। এই পুরস্কার শোষিত ও বঞ্চিত জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অবদানের জন্য বিশ্বশান্তি পরিষদের সর্বোচ্চ সন্মান। যা তত্কালীন বিশ্ব পরিস্থিতিতে অসামান্য একটি ঘটনা। ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, নেলসন ম্যান্ডেলা প্রমুখ নেতা এই অসামান্য স্বীকৃতি পেয়েছেন। এই পুরস্কার বঙ্গবন্ধু উৎসর্গ করে ছিলেন বাংলাদেশ সহ তৃতীয় বিশ্বের অসহায় সকল মানুষদের প্রতি। শান্তি পরিষদের এই ফোরামে ১৪০ দেশের ২০০জন নেতা -প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অন্য দিকে আলজেরীয়ায় অনুষ্ঠিত জোট নিরেপক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করেন যে, “মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম লড়াইয়ে বাংলাদেশের কন্ঠ সবসময় সোচ্চার থাকবে”। এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে ” বিশ্ববন্ধু ” আখ্যায়িত করা হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের পররাষ্ট্র নীতিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশদভাবে উল্লেখ আছে যে,সংবিধানের ২৫ নং অনুচ্ছেদ, “জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতি সমূহের প্রতি শ্রদ্ধা –এ সকল নীতি ও রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি”। শুধু তাই নয় সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশ হিসেবে পরাশক্তিদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জানান দিলেন তার অকুতোভয় দুঃসাহসী নেতৃত্বের বলিষ্ঠতার পয়গাম। যেমন, একই অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত যে, “সাম্রাজ্যবাদ,উপনিবেশবাদ বা বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সংগত সংগ্রামকে সমর্থন করবে”।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত পথে “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়।” পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্রকে ধরাণ করে শান্তি ও মানবতার দূত হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এবিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে তিনি বিশ্বশান্তির আহ্বানকরে তিনি তার এবং জাতির অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে বলেন “যুদ্ধ চাই না,শান্তি চাই, মানবকল্যাণ চাই। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি চাই”। শান্তি প্রতিষ্ঠা, ক্ষুধা -দারিদ্র্য, জঙ্গিবাদ নির্মূল সহ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দানে দায়িত্বশীল নীতি ও মানবিক যোগ্যতায় তিনি অনেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। পর্যবেক্ষক মহল আশাবাদী তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বিশ্বনেতাদের সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে সন্মানজনক প্রত্যাবর্তন সম্ভব হবে অচিরেই। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ সবদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে মহাসংকট এবং মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে উল্লেখ করে, বৈশ্বিক শান্তির জন্য রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান এবং সব ধরনের অস্ত্র প্রতিযোগিতা, নিষেধাজ্ঞা বন্ধের কথা বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরামে বলিষ্ঠ কন্ঠে উচ্চারণ করেন তিনি এবং করণীয় নিয়ে শলাপরামর্শ করছেন বিশ্বনেতাদের সাথে ।শান্তিময় বিশ্ব বিনির্মানে কার্যকরী ভূমিকা রাখার জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে দিনদিন নির্ভরযোগ্য নেতা হিসেবে বেড়ে উঠছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

বিগত ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ এবং ১জানুয়ারী ২০২৩ কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয় ” দরিয়ানগর আন্তর্জাতিক কবিতা মেলা ও লেখক দিবস”। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদার নেতৃত্বে শান্তিময় পৃথিবী কামনায় কবিতার শপথ এবং শান্তির প্রার্থনা হয়।সন্মেলনে আগত দেশী-বিদেশী কবিদের “শান্তির বাণী” নিয়ে কবিতা লিখে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে নৌকা ভাসানো হয়। বঙ্গোপসাগরের জলরাশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উপকূলের সাথে সংযুক্ত। কবিউপলদ্ধি এ শান্তির বার্তা পৌঁছে যাবে বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। এই অনুষ্ঠান থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে “শেখ হাসিনা শান্তির সৈকত” নাম ঘোষণা করা হয়। কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বিভিন্ন দেশের কবিদের সমন্নয়ে শান্তির পৃথিবী নিয়ে কাজ করছেন অনেকদিন আগে থেকে।

কলকাতায় আইএসআইএএসআর সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশ্ব শান্তি নিয়ে কাজ করার জন্য কবিকে শান্তি সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী কক্সবাজারের ভূমিপুত্র কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা কক্সবাজারকে “দরিয়ানগর” হিসেবে উপস্থাপন করে আসছেন অনেকদিন আগে থেকে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে পাহাড় সমুদ্রের ধারে অপরুপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য নিয়ে এই জনপদের নাম “দরিয়ানগর” যথার্থ মনে করছেন সংস্কৃতিধারক মহল। কক্সবাজারের আগের নাম ছিল পালংকি। অতীতে কক্সবাজার জুড়ে হলুদফুলে ভরা ছিল। পরে কালের বিবর্তনে প্যানোয়া হিসেবে পরিচিত লাভ করে এই জনপদ। প্যানোয়া শব্দের অর্থ”হলুদ ফুল”। পরে বৃটিশ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর অফিসার ক্যাপ্টেন “হিরণ কক্স” এর নামানুসারে আধুনিক কক্সবাজার পরিচিতি লাভ করে।ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী ব্যবসার নিমিত্তে আগমন করলেও লোভে পড়ে যায় এদেশের সম্পদ মণি-মুক্তা, হীরে-জহরতের প্রতি। তারা বারবার ব্যবসার চুক্তিভঙ্গ করলে তখনকার নবাবের সাথে বৈরিতা তৈরী হয়। তখন দেশীয় কিছু মীর জাফরদের সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী। শুরু করে শোষণ, লুটপাট, মানুষের উপর নির্যাতন। শুধু তাই নয় অত্যান্ত সচেতনভাবে উপনিবেশীক গোষ্ঠী এদেশের সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র বিধ্বস্ত করে। বৃটিশ পূর্ব বাংলার মানুষের মধ্যে সুখের অভাব ছিল না।গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ ছিল। বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের মানুষদের নিয়ে একইসমাজে একসাথে বসবাস ছিল ।ইতিহাস সাক্ষী, ‘সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী এদেশে আসার আগে সম্পদের প্রাচুর্যের জন্য ভারতবর্ষকে “বিশ্বগুরু” বলা হতো, আর এখন (তৎকালীন ভারতবর্ষের) দেশগুলো তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়”।

বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য দেশসমূহের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছি আমরা। শুধু তাই নয় সম্পদলুঠের পাশাপাশি রক্তপিপাসু হিংসাত্মক পশুর মত এদেশের মানুষের সাথে ব্যবহার করেছে তারা। ইউরোপীয়রা এদেশের মানুষদের নিকৃষ্টজীব হিসেবে দেখতো আর হিংসা করতো। চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে বৃটিশ আমলে একটি ইউরোপিয়ান ক্লাব ছিল,তাদের বিনোদনের জন্য। ক্লাবের বাইরে সাইনবোর্ডে লিখা ছিল, “কুকুর এবং ভারতীয়রা প্রবেশ নিষিদ্ধ।” ক্লাবটি এখন “বীরকন্যা প্রীতিলতা যাদুঘর” নামে পরিচিত।

বৃটিশদের নাগপাশ থেকে বেরিয়েও এদেশ ২৪ বছর পাকিস্তানি হায়েনা-দুর্বৃত্তরা লুটেপুটে খায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়। কিন্তু এখনো রয়ে গেছে বহিরাগতদের নিজেদের শাসনশোষণের সুবিধার নিমিত্তে সৃষ্টি করা দেশীয় সুবিধাভোগী শ্রেণী। যারা এখনো ছদ্মবেশে আমাদের মাঝে মিশে রয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার দেশীয় সুবিধাবাধী শ্রেণীই দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ঐক্যবদ্ধতার পথে বাধা। তাই সচেতন সমাজের অভিমত, “আমরা কতটুকু যুক্তিসম্মত শান্তিতে আছি”। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের মাথায় স্বাধীনতার পক্ষবিপক্ষ বিতর্ক রয়ে গেছে। রাষ্টীয় মূলনীতির উপর বারবার আঘাত, জাতীয়তাবাদ সহ চেতনার মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারায় বিভক্তি ইত্যাদি।কারণ আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিতে জানি না।

ইতিহাসের গভীরে প্রবেশ করতে চাই না। বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদ হয়তো বা নতুন করে ফিরে আসবে না। কিন্তু তাতে আমরা যতই আত্মতুষ্টি করি না কেন উপনিবেশীক সময়ের মানষিকতা আমাদের অনেকের মনোজগতে একান্ত গভীরে গিয়ে শেকড় গেঁথে আছে। কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদার ভাষায় “দরিয়ানগর” তার কাছে একটি নান্দনিক স্বপ্ন। এটি উপনিবেশিক মানসিকতা’র বিরুদ্ধে একধাপ প্রতিবাদ ও বটে”। কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক দিনের দাবী সাগরপাড়ের মানুষদের।সরকারের মন্ত্রী পর্যায় থেকে ও আস্বস্ত করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে। অচিরেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি আলোর মুখ দেখবে,কক্সবাজার কলেজ ” হীরক জয়ন্তীর মিলনমেলা” থেকে এপ্রত্যাশা সকলের।জনপদের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম “দরিয়ানগর বিশ্ববিদ্যালয়” নামকরণের দাবী করছে ।

কক্সবাজার সরকারি কলেজ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপিঠ। গৌরবের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে হীরকজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে হাজার হাজার আলোকিত আলোচিত সফল প্রাক্তন পড়ুয়াদের মিলনমেলা। সবাই এসেছে স্মৃতি হাতড়িয়ে স্মৃতি অনুভবের, স্পর্শ খুঁজতে। এই কলেজের আলোর রশ্মির ছোঁয়া জীবনের প্রতিটি পরতে আলোকমশাল বেশে পথ দেখাচ্ছে। প্রতিটি মানুষের জীবনটা পৃথিবীতে একএকটি ঝটিকা সফর।আর এই অভিযানের দিকনির্দেশনার বাতিঘর হল শিক্ষা প্রতিষ্টান। মিলন মেলায় উপস্থিতিদের জন্য এই কলেজ। তাই জীবনের সফলতা যেটুকুতে অত্র কলেজের কাছে চিরঋণী সবাই। মিলন মেলার বর্ণাঢ্য উদযাপনের সাথে প্রত্যয় হোক ভালবাসার কলেজ, ভালবাসার স্বদেশ শান্তিতে থাকুক এবং গড়ে উঠুক বাসযোগ্য শান্তির পৃথিবী।ধারণ করি বিশ্বশান্তির শোভা যাত্রায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণের বাণীর কথা –“আমরা দেখতে চাই,একটি শান্তি পূর্ণ বিশ্ব যেখানে থাকবে বর্ধিত সহযোগিতা, সংহতি, পারস্পরিক সমৃদ্ধি এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা। আমাদের একটি মাত্র পৃথিবী এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এই গ্রহকে আরও সুন্দর করে রেখে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব”। জয় বাংলা।

লেখক: বদরুল ইসলাম বাদল, সদস্য, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ

রোহিঙ্গাদের জন্য সাড়ে ৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা জাপানের

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে জাপান সরকার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন...

বাংলাদেশে ব্যবসার লাইসেন্স পেলো ইলন মাস্কের স্টারলিংক

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের এনজিএসও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৮ এপ্রিল) এই লাইসেন্স অনুমোদন করেন তিনি।...

হজযাত্রীদের সেবায় অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : হজযাত্রীদের সেবা সহজীকরণের জন্য প্রস্তুতকৃত মোবাইল অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে ধর্ম-কর্ম...

হজ প্রিপেইড কার্ড চালু করলো ইসলামী ব্যাংক

কর্পোরেট ডেস্ক: হজযাত্রীদের নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি ও ঝামেলা এড়াতে হজ প্রিপেইড কার্ড চালু করলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস...

মেঘনা ব্যাংকের ১৮৮তম পরিচালনা পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত

কর্পোরেট ডেস্ক : সম্প্রতি মেঘনা ব্যাংক পিএলসি-এর প্রধান কার্যালয়ে ১৮৮তম পরিচালনা পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন উজমা চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। পর্ষদ...

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের হজ বুথ উদ্বোধন

কর্পোরেট ডেস্ক: হজযাত্রীদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আশকোনা হজ ক্যাম্পে ‘হজ বুথ’ চালু করেছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। সোমবার (২৮ এপ্রিল) ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি...