আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: বুধবার দুপুর দুইটা। ঘটনাস্থল সেখারগাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের বারান্দায় কাপড় নেড়ে দেওয়া। স্কুলের কক্ষ তালাবদ্ধ। বেলা তিনটা পর্যন্ত স্কুল খোলার কথা থাকলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কেউ নেই। একদল সাংবাদিক স্কুলে পৌছালেন। তারা জানতে পারলেন স্কুলে শিক্ষক আছে চার জন। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শাহিন মহেশপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঠিকমতো ক্লাস করেন না। শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার।
গ্রামবাসি জানান, দুইটার আগেই স্কুল বন্ধ করে শিক্ষকরা চলে গেছেন। প্রধান শিক্ষক সকাল থেকেই আসেননি। সাংবাদিক আসার কথা শুনে কয়েক মিনিটের মধ্যে বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক হাজির হলেন। তিনি আবার বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ খুলে বসলেন।
তাকে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে নতুন ভবন নির্মান কাজ চলছে। সে কারনে তাড়াতাড়ি স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। মহেশপুর উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার আবু হাসান জানান, স্কুল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলার কথা। কিন্তু স্কুল যদি বন্ধ থাকে তাহলে আপনারা রিপোর্ট কুরন, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সরজমিনে দেখা যায়, ঐ স্কুলে ৫ম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ৩ জন, কিন্ত খাতা কলমে আছে ৮জন। ৪র্থ শ্রেনীতে শিক্ষার্থী আছে ৭ জন খাতা কলমে ১২জন, ৩য় শ্রেণীতে শিক্ষার্থী আছে ৮জন, খাতা কলমে দেখানো আছে ১৬ জন। হাজিরা খাতায় দেখা যায় গত দুই দিন শিক্ষার্থীদের হাজিরা নেয়া নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসি জানান, যে স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থীই নেই, মানসম্মত ক্লাস হয়না। শিক্ষকরা খেয়াল খুশি মতো আসেন সেখানে সরকার এত টাকা খরচ করে কেন ভবন তৈরি করছেন ? তবে শিক্ষা বিভাগের একটি সুত্র জানায়, এই চিত্র গোটা জেলার। প্রতিটি গ্রামে যেখানে একটি সরকারী প্রাইমারি থাকলেই হয়, সেখানে ২/৩টি করে সরকারী প্রাইমারি স্কুল করা হয়েছে। এতে সরকারের একদিকে যেমন অপচয়, তেমনি শিক্ষার্থীর অভাব রয়েছে।