আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাসে কলকাতার ভোজনরসিক বাঙালিদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিটের ইফতারি বাজার। সূর্য ডোবার আগে এলাকাটি পা ফেলার জায়গা থাকে না। সন্ধ্যার পরেও বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ নিতে দোকানে দোকানে ভিড় করে সব ধর্মের মানুষ। শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরাও ভিড় জমান জাকারিয়া স্ট্রিটের ইফতারি বাজারে।
কী নেই এই ইফতারি বাজারে! এলাকায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা ফলের সমাহার। খেঁজুর ছাড়া ইফতারের কথা ভাবাই যায় না। জাকারিয়া স্ট্রিটে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধরনের খেঁজুরের সমারোহ চোখে পড়ার মতো। দামও নাগালের মধ্যে। দামি, কম দামি সবধরনের খেঁজুর পাবেন নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন এই ইফতারি বাজারে।
সারা দিন রোজা রাখার পর একটু ভাজাপোড়া খাবার খেতে মন চায় অনেকের। তারও বিপুল সম্ভার জাকারিয়া স্ট্রিটে। বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, কিমা চপ, ধনিয়াপাতার চপ, মাছের চপসহ হরেক রকমের ইফতারি আইটেম পাওয়া যায়, যা গুনে শেষ করার যাবে না।
কলকাতার বাঙালি মুসলিমদের ইফতারে মাছের ব্যবহার কী পরিমাণ বেড়েছে, তা এই নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় আসলেই পরিষ্কার বোঝা যায়। এর পাশাপাশি আস্ত মুরগি ভাজা থেকে আর শুরু করে জালি কাবাব, শিক কাবাব, তন্দুরি ফিশ, তন্দুরি চিকেন, বাটার চিকেন, তন্দুরি বাটার চিকেন, বিভিন্ন ধরনের গোশতের রোস্ট, কিমা পরোটা, চিকেন কাটলেট, টানা পরোটা, রুমালি রুটি, তন্দুরি রুটি, দইবড়া, গরুর মাংসের রকমারি খাবারসহ শতাধিক বাহারি পদের খাবার মিলবে এই ইফতারি বাজারে।
রয়েছে রকমারি স্বাদের মিষ্টির পসরা। গাওয়া ঘিয়ে ভাজা জিলাপি থেকে শুরু করে রসগোল্লা, বিভিন্ন স্বাদের সন্দেশ, যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জন্য চিনি ছাড়া সন্দেশের ব্যবস্থাও রয়েছে জাকারিয়া স্ট্রিটের ইফতারি বাজারে। এখানকার লাচ্ছির জনপ্রিয়তা শহরজুড়ে।
জাকারিয়া স্ট্রিটের খাবারের স্বাদ নিতে আসা অনুপম দাস জানান, প্রতি বছর রমজান মাসে জাকারিয়া স্ট্রিটে বাহারি খাবারের স্বাদ নিতে আসি। এখানকার মাটন হালিমের স্বাদ না খেলে বোঝানো যাবে না। এই হালিম খেলাম, এখন বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
দ্বীপজয় ও দিয়াশা নামে দমদমের দুই তরুণী-তরুণীর কথায়, মোগলাই খাবারের খনি হচ্ছে এই জায়গা। প্রতি বছর বন্ধুদের মুখে শুনতাম। এখন এসে ভাবছি, আগে কেন আসা হয়নি এটাই আমাদের দু’জনের আক্ষেপ।