নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর পল্লবী থানায় করা প্রতারণার মামলায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২০ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার অন্য চার আসামি হলেন- জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার।
এদিকে রায় ঘোষণার সময় হেলেনা জাহাঙ্গীর ও হাজেরা খাতুন উপস্থিত না থাকায় তাদের পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২ আগস্ট রাতে পল্লবী থানায় জয়যাত্রা টেলিভিশনের ভোলা জেলা প্রতিনিধি আবদুর রহমান তুহিন মামলাটি করেন।
হেলেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন। প্রতিবেদক হিসেবে কয়েক মাস কাজ করলেও তাকে কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে তার কাছ থেকে প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা নেয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইড) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন তোফাজ্জল হোসেন দণ্ডবিধি ৪২০/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার এবং জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন। নিজেকে তিনি আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিতেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগেরও উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন।
‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি ‘ভূইফোঁড়’ সংগঠনে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সভাপতি হওয়ার খবর চাউর হলে ২০২১ সালের জুলাই মাসে তাকে দুই কমিটি থেকেই বাদ দেয় আওয়ামী লীগ।
এরপর ওই বছর ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, একটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, একটি হরিণের চামড়া, দুটি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, দুটি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার ৪৫৬টি চিপস জব্দ করা হয়।
সেই রাতে মিরপুরে জয়যাত্রা টেলিভিশনের কার্যালয়েও অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে বিটিআরসির সহযোগিতায় অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশন বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়।
পরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। সেসব মামলায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। পরে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পান হেলেনা।
আরও পড়ুন:
আরাভ খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি