রাজধানী ঢাকার বেসরকারি নর্থ সাউথ, ইস্ট ওয়েস্ট, সাউথইস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন ছাত্রকে রিমান্ডে নেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করেছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে নয় দিন ধরে চলা আন্দোলনের সময় সংঘটিত নানা ঘটনায় ঢাকার ১৬টি থানায় ৩৪টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার বসুন্ধরা এবং বাড্ডা এলাকায় সংঘর্ষ ও সহিংসতার সাথে জড়িত সন্দেহে এবং পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে এসব শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। মামলাগুলোতে অজ্ঞাতনামা হিসেবে অনেককে অভিযুক্ত করায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও আতঙ্ক।
নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলনে সরব উপস্থিতি ছিল স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের, তবে তাদের কাউকে আটক করা হয়নি। আবার এদের ওপর হেলমেট পড়ে লাঠিসোটা নিয়ে হামলাকারীরা আইনের আওতায় আসেনি। ছাত্রদের অভিযোগ, যারা হেলমেট পড়ে, লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অথচ এখন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতার কারণে দেশের ছাত্র সমাজের একটি বৃহৎ অংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। যতদূর জানা যায়, বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রত্যক্ষভাবে রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ড নেই। এখানে সরকার দলীয় কিংবা বিরোধী দলীয় কোন দলের ছাত্র সংগঠনের অস্থিত্ব নেই। ফলে, তাঁদের নেই কোন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। আন্দোলন বলতে এবার যা হয়েছে, তা জাতির বৃহত্তর স্বার্থে। ছোটদের দেখিয়ে দেয়া পথে আন্দোলন করতে গিয়ে বেশকিছু ছাত্র আহতও হয়েছে।
সরকারের দায়িত্ব দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়া, ছাত্রদের পড়ালেখার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করা। এছাড়া দেশের প্রতিটি নাগরিকের আস্থার জায়গা হলো সরকার। উল্লেখিত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ‘অজ্ঞাত’ আতঙ্কে থাকা সাধারণ ও নিরীহ শিক্ষার্থীদের পড়ার সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখার বৃহত্তর স্বার্থে সন্তোষজনক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে যাতে এই অজ্ঞাত আতঙ্ক দূর হয়, সে ব্যাপারে দ্রুত ও কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
আরো পড়ুন: