মোবাইল অপারেটররা এখনো ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করছে। বাজেটে ১৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ইন্টারনেট সেবার উপর ভ্যাট রাখা হয়েছে ৫ শতাংশ। এ ব্যাপারে এনবিআরের পক্ষ থেকে বিশেষ আদেশ (এসআরও) জারি করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত কোন চার্জ কমায়নি মোবাইল অপারেটররা। কেনো তারা চার্জ কমাচ্ছে না তা জানতে চেয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নোটিশের কোন জবাব দেয়নি অপারেটাররা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ইন্টারনেট চার্জ না কমালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কি সেই কঠোর ব্যবস্থা তা এখন দেখার অপেক্ষায় আছে দেশবাসী। প্রযুক্তি এবং মোটা অংকের বিনিয়োগের কারণে সেলুলার সেবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ভিত্তিক হয়ে গেছে।
একমাত্র দেশীয় কোম্পানি, যাদের বিদেশি বিনিয়োগ ছিল খুব কম সেই সিটিসেল বন্ধ হয়ে গেছে রাজনীতির মারপ্যাঁচে। এক সময় ডাকাতি করলে পরে সিটি সেল অনেক কম পয়সায় সেবা প্রদান করছিল। তারা ২৫ পয়সা ও ৬০ পয়স ফ্লাট রেট চালু করেছিল। কিন্তু ওই কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে গেলে সেলুলার সেবা বিদেশিদের অনেকটা এক চেটিয়ে হয়ে গেছে। তারা সিন্ডিকেট করে উচ্চ মুনাফা ধরে রেখেছে এবং বৈধপথে বিপুল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে পাচার করছে। সরকারি কোম্পানি টেলিটক তাদের সাথে পেরে উঠছে না। তারা অতিমুনাফার চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে কোম্পানিগুলো সবচে বেশি মুনাফা করছে ইন্টারসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে। মেয়াদের ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
দেশের বিশিষ্ট তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, তাঁর প্রধান কাজ হবে ইন্টারনেটের খরচ কমানো। তিনি তার কথা রেখেছেন। ভ্যাট কমানোতে সরকারকে রাজি করতে পেরেছেন। কিন্তু মোবাইল অপারেটরদের অতিমুনাফার কারণে যদি তা ভেস্তে যায় সেটা সরকারের ব্যর্থতা বলে বিবেচিত হবে। এখন প্রতিদিন ২ কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ওই ১০ শতাংশ ভ্যাট বাবদ। যা সরকারি কোষাগারে জমা হবে না কিন্তু জনগণের পকেট থেকে ঠিকই বেরিয়ে যাচ্ছে।
সরকার ভ্যাট কমিয়েছে একটা মহৎউদ্দেশ্যে নিয়ে, যাতে জনগণ কম খরচে ইন্টারনেট সেবা পেতে পারে। যাতে গরিব মানুষরাও সেবা পায়। কিন্তু সবগুলো কোম্পানিই অনিয়ম করে যাচ্ছে।
ভ্যাটের প্রত্যাহার করা ১০ শতাংশের সুবিধা যাতে গ্রাহকরা পায় সেজন্য যে কোন ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে শিথিলতা দেখালে তা মোবাইল অপারেটদের দৌরাত্ম আরো বাড়িয়ে দিবে।
আরও পড়তে পারেন: